বুড়ো রাজনীতিবিদদের মতো আমরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিই না: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আমরা এমন এক নতুন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোনো প্রধানমন্ত্রীর হাতে একক ক্ষমতা থাকবে না, তাকে প্রশ্ন করার কেউ থাকবে না—এমন রাষ্ট্র কাঠামো আমরা চাই না।”

মানিকগঞ্জে এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ বলেন, “আমরা সেই প্রথাগত রাজনীতির পথ ধরে হাঁটছি না, যে পথ শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা জানি আপনারা কী চান, আমরা জানি দেশের মানুষ কী চায়—আমরা সেই সমস্যাগুলোকেই মুখ্য করে সামনে নিয়ে এসেছি। আমরা বলছি না, গণঅভ্যুত্থানের পর শুধু একটা নির্বাচন হলেই চলবে। আমরা বলছি, নির্বাচন চাই, তবে তার আগে চাই বিচার, চাই সংস্কার।”

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় অনেকে এক হয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের প্রশ্নে, কিন্তু নতুন রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্নে এক ছিল না। কেউ কেউ পুরোনো রাষ্ট্র কাঠামোকে রেখে শুধু নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার ছক আঁকছিল। আমরা সে পথ থেকে আলাদা হয়েছি, তাই নতুন দল করতে হয়েছে।”

মানিকগঞ্জের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “৪ আগস্ট মানিকগঞ্জ আওয়ামী মুক্ত হয়েছিল। ’৭১-এ ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু উন্নয়নের দিক দিয়ে মানিকগঞ্জ আজও পিছিয়ে। আমরা সেই পিছিয়ে পড়া মানিকগঞ্জের পরিবর্তনের কথা বলি।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “মানিকগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি—বেড়িবাঁধ, সেতু, রাস্তাঘাট উন্নয়ন—এসব আমরা শুনেছি। কিন্তু আমরা বলছি না যে পাঁচ মাসের একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি এসে হঠাৎ করেই সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে। সেই বুড়ো রাজনীতিবিদদের মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে আসিনি।”

তিনি আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা বলেছিলাম সংসদ হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট—উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষ হবে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) ভিত্তিক, অর্থাৎ ভোটের অনুপাতে। তাহলে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হবে, একজন ব্যক্তির হাতে সবকিছু থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীকেও প্রশ্ন করার কাঠামো থাকবে রাষ্ট্রে।”

শেষে তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার মতো এই রাষ্ট্রে কেউ নেই, আপনারাই আছেন। আমরা আপনাদের ভরসায়, আপনাদের সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আছি।"


এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
টানা ৩ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা Sep 13, 2025
img

ব্রাজিলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে

বিচারব্যবস্থার মধ্যে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আলোচনা Sep 13, 2025
img

জাকসু নির্বাচন ২০২৫

নির্বাচনে কারচুপি প্রমাণিত হলে চাকরি ছেড়ে দেব : জাকসুর সিইসি Sep 13, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে আটক ১০ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 13, 2025
img
মেসিকে নিয়ে সুখবর দিলেন মাশচেরানো! Sep 13, 2025
img
পদত্যাগ করলেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য ড. স্নিগ্ধা Sep 13, 2025
img
শ্রীলেখাকে বয়কট ইস্যুতে নীরব পুলিশ, পদক্ষেপ নিল আদালত Sep 13, 2025
img
অবশেষে শেষ হলো জাকসুর ভোট গণনা Sep 13, 2025
img
সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ বছরে প্রাণহানি ৮৬ হাজারের বেশি Sep 13, 2025
img
জামায়াত আমিরের উদ্দেশে নীলা ইসরাফিলের বার্তা Sep 13, 2025
img
আজ রাতেই প্রকাশিত হবে চাকসু নির্বাচনের সংশোধিত ভোটার তালিকা Sep 13, 2025
img
একাত্তর সম্মানের, জুলাইও অস্বীকার করা যাবে না : মাওলানা হালিম Sep 13, 2025
img
সুনামগঞ্জে কার-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২ Sep 13, 2025
img
হঠাৎ মণিপুর সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি! Sep 13, 2025
img
নেপালের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Sep 13, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এনসিপি নাই হয়ে গেছে : মোস্তফা ফিরোজ Sep 13, 2025
img
গ্রুপ অব ডেথে বাংলাদেশ নয়, শোয়েবের পছন্দ অন্য দুটি দল! Sep 13, 2025
img
মাহফুজ আলমের গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ, ক্ষোভ প্রকাশ রাশেদ খাঁনের Sep 13, 2025
img
৩৩ বছর জাকসু হয়নি, অভিজ্ঞতা কম থাকায় ফল প্রকাশে সময় লাগছে: জাবি প্রক্টর Sep 13, 2025
img
এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না : গয়েশ্বর Sep 13, 2025