আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় নির্বাচন করার ব্যবস্থাটি বাতিল করে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে (তত্ত্বাবধায়ক) যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমরা সেখানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি। সেই সরকারের (তত্ত্বাবধায়ক) প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে একটি সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
রোববার (২০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় দাফে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৫তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ইতোমধ্যেই জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ করছে। আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। আশা করছি, বাকি দিনগুলোর সংলাপে আরও কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। সব রাজনৈতিক দলই এই ব্যাপারে একমত, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের তিন উপ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। সংশোধিত ভাষ্য হবে, ত্রয়োদশ সংশোধনীর বিধান, যা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে। অর্থাৎ সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় নির্বাচন করার ব্যবস্থাটি ছিল সেটা বাতিল করে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমরা সেখানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি।
আজ অধিকাংশ সময় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টা নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন রকম প্রস্তাব ছিল। আমরা সর্বশেষ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী চারটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমরা প্রস্তাব পেয়েছি। তারা হলো- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী।
তিনি আরও বলেন, চার দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে কমিশন সকালে একটি সংশোধিত প্রস্তাব হাজির করে। এই প্রস্তাবের একটি লিখিত ভাষ্য তৈরি করা হয়েছে এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ওই লিখিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারা ওই খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে দলগতভাবে আলোচনা করে আগামীকাল আমাদের মতামত জানাবেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আশা করছি পরশুদিন এ বিষয়ে কমিশনের অবস্থান বা একমত হওয়ার জায়গাটা বলতে পারব।
আলী রীয়াজ বলেন, উচ্চকক্ষের বিষয়ে একাধিক দিন আলোচনা হয়েছে। উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা বিষয়ে কোন ভিন্ন মত নেই। তবে কীভাবে হবে সে বিষয়ে দুটো মত আছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর এই মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের কাছে এই দায়িত্ব অর্পণ করেছে। কমিশন ইতোমধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা করেছে।
এসএন