রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গোটা দেশ যখন শোকে স্তব্ধ, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা ও দায়িত্বহীনতা নিয়ে সরব হয়েছেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল।
ইউটিউবে এক ভিডিও বার্তায় মাসুদ কামাল বলেন, ‘এই ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন, তারা নিষ্পাপ শিশু। দেবশিশুদের এমন নির্মম মৃত্যু কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’
তিনি দাবি করেন, নিহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং বার্ন ইউনিটে ভর্তি শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক লাভের আশায় ‘লোক দেখানো প্রচারণায়’ ব্যস্ত রাজনৈতিক নেতারা।
তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় ভিড়ই এখন সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। অথচ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বা প্রধান উপদেষ্টাকে দেখা যায়নি হাসপাতালে। বরং অন্যান্য উপদেষ্টা-সহকারীরা ভিড় করেছেন, ছবি তুলেছেন।’
এই দুর্ঘটনায় প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য— এই তিন মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছেন মাসুদ কামাল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে রাত ২টা ৪১ মিনিটে। অথচ দুর্ঘটনা ঘটেছে দুপুরে। সকালবেলায় বহু শিক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে জানতে পেরেছে পরীক্ষা স্থগিত। এমন অগণতান্ত্রিক, অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত উদাহরণ আর কী হতে পারে?’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কোথায়? আহতদের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকেই দেখা যায়নি।
আর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কী অবস্থা?’
মাসুদ কামাল জানান, বিধ্বস্ত বিমানটি চীনে তৈরি, ২০১৩ সালে কেনা। চীন এই বিমান তৈরি বন্ধ করে দিলেও বাংলাদেশ শেষ গ্রাহক হয়ে তা কিনেছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘৩৬টি বিমানের মধ্যে ৩টি বিধ্বস্ত। প্রায় ১০ শতাংশ বিধ্বস্তের হার। এই বিমানটা চালায় কেন? এটা দিয়ে প্রশিক্ষণ করানো হয় কেন?’
তিনি বলেন, ‘এগুলো কিনেছে ২০১৩ সালে হাসিনা সরকার আমলে, বুঝাই যাচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় বিমান বেশি দাম দিয়ে কিনে টাকা পাচার করেছে।
এ সমস্ত সামরিক কেনাকাটার তো কোনো হিসাবও হয় না, কোনটা কত দিয়ে কার কাছ থেকে কিনল কেউ জানে না। কেনার পর টাকা পয়সা জায়গা মতো চলে যায়।’
এদিকে ছাত্রদের বিক্ষোভ নিয়ে মাসুদ কামাল বলেন, ‘নিহতদের নাম প্রকাশের দাবিতে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসেছে— এর চেয়ে বড় অবিশ্বাস আর কী হতে পারে? ছাত্ররা এখন ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিচ্ছে। উপদেষ্টাদের ভবনে আটকে রেখেছে। কেন? কারণ সরকার জনগণের আস্থা হারিয়েছে।’
এমআর/এসএন