ভয়াবহ বন্যার মধ্যে চীনে ভূমিধসে ৬ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১০

অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাতে চীনের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। যার ফলে শত শত লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। 

উত্তর হেবেই প্রদেশের লুয়ানপিং কাউন্টির একটি গ্রামে ভূমিধসের ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সোমবার চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, চেংদে শহরের কাছে একটি গ্রামে ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের এ ঘটনা ঘটে। 

চীন কর্তৃপক্ষ ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে এবং অঞ্চলটির বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করেছে। বেইজিংয়ের উপশহর মিয়ুন জেলার তাইশিতুন টাউনশিপে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয় যা আবাসিক এলাকা থেকে একাধিক যানবাহন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। 

টানা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিলে সেখান থেকে অন্তত ৪,৪০০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের বহু গ্রামে এই দুর্যোগের প্রভাব পড়েছে। চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, মিয়ুনের রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গেছে, যেখানে গাড়ি ও ট্রাক পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে এবং আবাসিক ভবনগুলোও প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

চীনের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে সাধারণত শুষ্ক জলবায়ুর এলাকা হিসেবে পরিচিত অঞ্চলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের মুখোমুখি হচ্ছে, যার ফলে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলো, এমনকি রাজধানী বেইজিংও।

কিছু বিজ্ঞানী এই অতিবৃষ্টির প্রবণতাকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত করছেন।

চীনের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী তিন দিন উত্তরাঞ্চলজুড়ে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। জলসম্পদ মন্ত্রণালয় বন্যা প্রবণ ১১টি প্রদেশ ও অঞ্চলে লক্ষ্যভিত্তিক সতর্কতা জারি করেছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা সিনহুয়া জানায়, সোমবার বেইজিং সর্বোচ্চ মাত্রার বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। হেবেই প্রদেশে ‘গুরুতর’ বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছে।

এছাড়া শানশি প্রদেশেও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে সড়ক পানিতে ডুবে গেছে এবং ফসল ও গাছপালা প্লাবিত হয়েছে বলে রাজ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে। ঐতিহাসিক শহর শিয়ান অবস্থিত এই প্রদেশেও তাৎক্ষণিক বন্যার ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।


ইউটি/এসএন


Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘শরীর! শরীর! তোমার মন নাই?’, জয়াকে বললেন আবীর Jul 29, 2025
img
গাজা প্রসঙ্গে মোদির ‘লজ্জাজনক নীরবতার’ কঠোর সমালোচনা সোনিয়া গান্ধীর Jul 29, 2025
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, আদালতে আত্মসমর্পণ রাজকুমার রাওয়ের Jul 29, 2025
img
মাওলানা ভাসানী না থাকলে শেখ মুজিব তৈরি হতে পারতো না : নাহিদ ইসলাম Jul 29, 2025
img
কলেজ ও স্থাপনার নাম বদল, বাদ মুজিব-হাসিনা-কামালের নাম Jul 29, 2025
img
প্রথমবার একসঙ্গে রাফী-জিৎ, আসছে ব্যতিক্রমী অ্যাকশন সিনেমা ‘লায়ন’ Jul 29, 2025
img
'এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও বিশ্বাস করবেন না, আল্লাহর দোহাই লাগে' Jul 29, 2025
img
ইউরোপে খেলে যাওয়া ক্লাবের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলে যোগ দিচ্ছেন নেইমার! Jul 29, 2025
বিএনপির চাঁদাবাজি নিয়ে যা বললেন নাহিদ ইসলাম Jul 29, 2025
img
বিয়ে করার মতো মানুষ এখনো খুঁজে পাননি অভিনেত্রী তমা মির্জা Jul 29, 2025
img
দেবের চোখে শুভশ্রী এখন আরও পরিণত অভিনেত্রী! Jul 29, 2025
img
সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে, মোদির জয়জয়কারে আবারও শিরোনামে তনুশ্রী Jul 29, 2025
img
চীন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ তৃতীয় পক্ষবিরোধী জোট নয়: চীনা রাষ্ট্রদূত Jul 29, 2025
img
সবচেয়ে ভয়ংকর ভুল করেছেন আমাদের চিফ প্রসিকিউটর : তারেক Jul 29, 2025
‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই হবে ক্ষমতা পরিবর্তন’ Jul 29, 2025
img
বর্তমান সরকারের আমলেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের রায় হবে : আসিফ নজরুল Jul 29, 2025
img
টপ কমান্ডারদের বিচার, একটা বড় অংশের বিচার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে: চিফ প্রসিকিউটর Jul 29, 2025
img
'জুলাই হত্যাকাণ্ডে নির্দেশদাতা ও জড়িতরা কীভাবে পালালো, তার বিচারও করতে হবে' Jul 29, 2025
img
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৪ হাজার প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগ নিল সরকার Jul 29, 2025
img
১১ দিনের বিশেষ সতর্কতার নির্দেশনার বিষয়ে জানা নেই : আইজিপি Jul 29, 2025