জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য আবাসন প্রকল্পের বিভিন্ন ক্রয়ে বাজারমূল্যের কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে।
সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য আবাসন প্রকল্পের বিভিন্ন ক্রয়ে বাজারমূল্যের কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুদক জানায়, জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য আবাসন প্রকল্পের বিভিন্ন ক্রয়ে বাজারমূল্যের কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক টিম গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে সরেজমিনে অভিযান পরিচালনা করে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। টিম সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও বক্তব্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছে দুদক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে মানসম্মত আবাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ‘৩৬ জুলাই’ নামে এই আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু যথাযথ নিয়ম-কানুন না মেনেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পে ৪৫ গুণ বেশি ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর, চারগুণ বেশি ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বেড লিফট, সাবস্টেশন কেনা হচ্ছে পাঁচ গুণ, এমনকি পানির পাম্পও কেনা হয়েছে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি দামে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ বলছে, প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিক দর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বিগত সরকারের আমলে প্রকল্পের নামে যে ‘হরিলুট’ হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও সেই পুরানো প্রেতাত্মা ভর করেছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের আবাসন সুবিধা দিতে বিনামূল্যে ৮ শতাধিক ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৭৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নড়াইল পৌরসভায় ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে শোধনাগারটি তিন মাসেই বিকল হয়ে পড়ে, ফলে পৌরবাসী সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযানে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা মিলেছে। অন্যদিকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা প্রদান অনিয়মের অভিযোগে দুদকের পিরোজপুর টিম ছদ্মবেশে সেবা গ্রহণ করে তদন্ত চালায়। রোগীদের খাবার, ওষুধ ও ল্যাব সেবার মান যাচাই করা হয় এবং সেবাগ্রহীতাদের মতামত নেওয়া হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিলের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
ইউটি/টিএ