মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা আলোচনায় পেয়েছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানও এই উইকেট নিয়ে জানালেন ক্ষোভ! দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটারদের সংগ্রাম, কম রান এবং ধীরগতির পিচ নিয়ে সমালোচনার সঙ্গে একমত তিনিও।
আকরাম খান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ১৬০-১৭০ রান হয় না, এমন পিচে খেলা উচিত না। (পাকিস্তান সিরিজে) উইকেট খুব ভালো ছিল না। ঢাকার বাইরেও ভালো উইকেট আছে, যেখানে বেশি রান হয়। সেখানে আমরা খেলানোর চিন্তাভাবনা করেছি।’
তার বিশ্লেষণ-বর্ষাকালে মিরপুরের উইকেট এমনিতেই স্লো হয়ে পড়ে। তার উপর অতিরিক্ত ম্যাচ আয়োজনে উইকেটের মান আরও নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এখনই সময় মিরপুরের উইকেটকে কিছুদিন ‘বিশ্রাম’ দেওয়ার।
আকরাম আরও জানান, ঢাকার বাইরের মাঠগুলোতে তুলনামূলক ভালো উইকেট পাওয়া যায় এবং সেখানে বেশি রানও হয়। তাই এসব ভেন্যুতে ম্যাচ আয়োজনের চিন্তা করছে বিসিবি। এতে করে দর্শকরাও পাবে উপভোগ্য, হাইস্কোরিং ম্যাচ, ‘৪-৫ বছর আগের চেয়ে উইকেট অনেক উন্নতি করেছে। তবে ঢাকায় প্রচুর খেলা হয়, সমস্যা এটা। ঢাকাকে বিশ্রাম দেওয়া উচিত!’
আকরাম যা বলতে চাইছেন তাতে স্পষ্ট মিরপুরের উইকেটকে 'বিশ্রাম' দেওয়ার সময় এখনই।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডসের ফাইনালেও সেই একই দৃশ্য। ব্যাট হাতে দাপট এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ফাইনালেও একই ম্যজিক! পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নসকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে ট্রফি জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস। বার্মিংহামের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত ফাইনালে গতকাল রাতে ম্যাচের নায়ক ছিলেন একাই- ভিলিয়ার্স।
নানা বিতর্কে ঘেরা পাকিস্তানের সরাসরি ফাইনাল খেলাই জন্ম দেয় সমালোচনার। সেমিফাইনালে ভারত না খেলায় ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হয়েছিল পাকিস্তানের। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে প্রোটিয়া মহাতারকা ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে তারা কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি।
পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে তোলে ১৯৫ রান। ওপেনার শারজিল খান করেন ৪৪ বলে ৭৬। তবে বিশাল লক্ষ্যও মামুলি হয়ে যায় ডি ভিলিয়ার্সের তাণ্ডবে। তিনি ৬০ বলে ১২০ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ইনিংসে ছিল ১২টি চার ও ৭টি ছক্কা। সঙ্গী জেপি ডুমিনি করেন অপরাজিত ৫০ রান।
জবাবে খেলতে নেমে মাত্র ১৬.৫ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। হারায় মাত্র একটি উইকেট-হাশিম আমলার (১৪)। সেই উইকেটটি নেন পাকিস্তানের সাঈদ আজমল। ডি ভিলিয়ার্স শুধু ম্যাচ নয়, পুরো টুর্নামেন্টেই ছিলেন অনন্য। ১৪৩ গড় ও ২২০ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ৪৩১ রান, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটি। পেয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়, ফাইনাল সেরা, মাস্টার ব্লাস্টার, মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার এবং গেম চেঞ্জার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার।
ডব্লিউসিএলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচই বয়কট করেছে ভারত। এর পেছনে রাজনৈতিক কারণের ইঙ্গিত রয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, কাশ্মীরের এক জঙ্গি হামলায় নিহত পর্যটকদের বিষয়টি প্রভাব ফেলেছিল ক্রিকেটারদের সিদ্ধান্তে। ম্যাচ বয়কটের সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিল আয়োজক ইজ মাই ট্রিপ। ভারতের সাবেক তারকা সুরেশ রায়না এক্স হ্যান্ডলে সেই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে লেখেন, ‘যদি আমরা খেলতাম, তাহলে ওদের ধসিয়ে দিতাম। তবে দেশ আগে।’
ফাইনালে পাকিস্তানের হয়ে শারজিল খান পান ‘ফ্যান ফ্যাভারিট লিজেন্ড’ পুরস্কার। তবে সব আলো কেড়ে নেন ডি ভিলিয়ার্স। তার ব্যাটেই দক্ষিণ আফ্রিকা জেতে ২ লাখ মার্কিন ডলার। রানার্সআপ পাকিস্তান পায় ১ লাখ মার্কিন ডলার।
পিএ/টিকে