এক বছরে দেশের অর্থনীতি অনেকটা উপরে উঠে এসেছে : অর্থ উপদেষ্টা

খাদের কিনারা থেকে গত এক বছরে দেশের অর্থনীতি অনেকটা উপরে উঠে এসেছে এমন মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি, শুল্কসহ সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। তবে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং স্লো হয়ে যাওয়া ব্যবসা-বাণিজ্যে আরও একটু গতি সঞ্চার করা।

বুধবার (৬ আগস্ট) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খাদের কিনারা থেকে অর্থনীতি অনেকটা উপরে উঠে এসেছে। এটা দেখার জন্য একটু দৃষ্টি এবং অন্তদৃষ্টি লাগে। একেবারে ওপরে ওপরে ভাসা ভাসা দেখলাম, ভাসা ভাসা বলে দিলাম, তা না। অনেক কিছুই হয়েছে। চ্যালেঞ্জ যেটা ছিল, একেবারে প্রকুরিয়াস (ঝুঁকিপূর্ণ বা টালমাটাল) অবস্থায় ছিল। এখন আমরা একটা স্বস্তির জায়গায় আসতে পারছি।

তবে অবশ্যই সামনে চ্যালেঞ্জ আছে। চ্যালেঞ্জ অনেকগুলো- আমাদের মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি, এখন ট্যারিফের ব্যাপার আছে। আর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ব্যবসায়ীদের আস্থা আনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য আর একটু গতি সঞ্চার করা, যেটা স্লো হয়ে গেছে’ বলেন সালেহউদ্দিন।

তিনি বলেন, আমাদের সময়ে আমরা যেগুলো তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করতে পারব, সে ধরনের প্রকল্পে আমরা মনোনিবেশ করছি। বিশেষত ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সহজ হয়।

মূল্যস্ফীতি কি স্বস্তির জায়গায় আসছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্বস্তির জায়গায় আসতে একটু সময় লাগবে। মূল্যস্ফীতি এমন না ঘোড়ার রাশ ধরে টেনে দিলাম। ঘোড়ায় চড়তে হলে, মাথাটা টেনে তুলতে হয়। মূল্যস্ফীতি এ রকম না, একদিনে সব কমিয়ে দিলাম। এটা কমছে, তবে নন-ফুডটা আমাদের একটু চ্যালেঞ্জিং।

বাজেট ঘাটতি ও নির্বাচনের বাজেট নিয়ে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য যে অর্থ লাগবে আমরা দেব। সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। প্রভিশনাল হিসাব অনুযায়ী এই পর্যন্ত বাজেট ঘাটতি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ মাত্র, যেটা আমরা বলেছি ৪ দশমিক ৫ এর মধ্যে রাখব।

সংস্কারের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ইমিডিয়েট কতগুলো জিনিস আমরা করে ফেলেছি। কতগুলো আছে মিডটার্ম, লংটার্ম আমরা সেগুলো..। যেমন ব্যাংক রেজুলেশন, একটু সময় লাগবে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটা রোর্ডম্যাপ করছে। ক্যাপিটাল মার্কেট মোটামুটি চেষ্টা করছে, সেটা হয় তো আরও একটু উন্নতি হবে। এনবিআর’র বিষয়ে তাড়াড়াড়ি অধ্যাদেশটা সংশোধন করা হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু একটা করে ফেলব।

যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক নির্ধারণ করেছে, সেটা স্বিস্তিদায়ক কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আর একটু কমলে ভালো হতো। তবে ওরা যেটা করেছে মোটামুটি, তবে স্বস্তির জায়গা বলবো না। আমরা তো চই এটা (পাল্টা শুল্ক) না হলে ভালো হতো। এমনিতেই বিশ্ব অনেক চ্যালেঞ্জে। আর যদি অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, তবে বাংলাদেশ খুব খারাপ পজিশনে নেই। আমাদের সুযোগ হলো- আরএমজি অনেক ভালো। আমাদের টেক্সটাইল, আমাদে নিট যেটা, সেটা কিন্তু ওরা অনেক তাড়াতাড়ি এডজাস্ট করতে পারবে। ওয়েভিং একটু ডিফিক্যাল্ট হতে পারে।

আপনারা কি আবার দরকষাকষিতে যাবেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, হ্যা। বশির সাহেব (বাণিজ্য উপদেষ্টা) এখনো আসেননি। আমি ইউএস চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। ওদের বাংলাদেশের বিষয়ে মনোভাব খুবই ভালো। বলে তুমি শেভরনের টাকা ফেরত দিয়েছো, মেটলাইফের টাকা দিয়ে দিয়েছো। বলে তোমরা তো টাকা আটকে রাখো না। ব্যাবসায়ীদের কিন্তু বাংলাদেশের ওপর ভালো মনোভাব আছে।

তিনি বলেন, চুক্তি এখনো সই হয়নি। একটা ফরমাল চুক্ত সই হবে। এখানে আমরা দেখবো কোন কোন জাগায় আমাদের ডিউটি (শুল্ক) কমাতে হবে। কি কি আমদানি করতে হবে।

আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যখন ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হয়, অনকে কথা বলা হয় না। এটা মাল্টিলেটার নেগোসিয়েশন না, এটা ডব্লিউটিও না, এটা ইউএন না, যে সবাই জানবেন। ওখানে ভিয়েতনাম আমার প্রতিদ্বন্দ্বি, আবার চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান সবাই আছে। কতোগুলো জিনিস আছে বলা যায় না।

এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে ২৪৪ জন শিক্ষকের উদ্বেগ Aug 07, 2025
img
আগামী ১৫-২০ বছরও চেন্নাইয়ে থাকবেন ধোনি! Aug 07, 2025
img
আরপিও সংস্কারের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে বৈঠকে ইসি Aug 07, 2025
img
কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ৪৮ কোটি টাকা লোপাট, আসামি সাইফুজ্জামানসহ ৪৭ Aug 07, 2025
img
গণঅভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাতপরিচয় ৬ মরদেহ আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর Aug 07, 2025
img
রমজানের আগেই নির্বাচন জনদাবি ছিল: সালাহউদ্দিন Aug 07, 2025
img
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে রাখা যাবে না : ফারুক Aug 07, 2025
img
বিমানবন্দরের চারপাশে ২৬৩টি অনুমোদনহীন উঁচু ভবন, জানানো হয়েছে রাজউককে Aug 07, 2025
img
বেরোবির সাবেক ভিসি কলিমউল্লাহ গ্রেপ্তার Aug 07, 2025
img
দুদকের মামলায় পাপিয়া দম্পতির রায় ১৪ আগস্ট Aug 07, 2025
img
১০ বছরের সাজা থেকে জি কে শামীমকে হাইকোর্টের খালাস Aug 07, 2025
নির্বাচনের বাজেট নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা Aug 07, 2025
img
শাহবাগীদের প্রতিরোধে এনসিপি নেত্রীর কড়া বার্তা Aug 07, 2025
img
আজ মুক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশি "12th Fail" Aug 07, 2025
img
হিন্দিতে কথা বলতে নারাজ কাজল, মেজাজ হারালেন সাংবাদিকের প্রশ্নে Aug 07, 2025
img
২ মাসের ব্যবধানে ফের যুক্তরাষ্ট্র সফরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান Aug 07, 2025
img
হিরো আলম প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছে, ডিভোর্স দিব : রিয়া মনি Aug 07, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আজ থেকে নতুন হারে শুল্ক দিতে হবে বাংলাদেশকে Aug 07, 2025
img
রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক Aug 07, 2025
img
জুলাই শহীদের তালিকা থেকে ৮ জনের নাম বাতিল করে গেজেট প্রকাশ Aug 07, 2025