‘শাহবাগীদের সেই পুরনো আওয়ামী ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে দেয়া যাবে না’

২০২৪ সালে মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনার পর, শাহবাগ-কেন্দ্রিক পুরোনো আওয়ামী লীগপন্থী ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে দেয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. মাহমুদা মিতু। বুধবার (৬ আগস্ট) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

পোস্টের শুরুতে তিনি লেখেন, আমার এই আইডিটা ছিল একটা ফেইক আইডি। ২০১২-১৩ সালের দিকে অপরিপক্ব, আবেগপ্রবণ মন নিয়ে শাহবাগী আর নাস্তিকদের পড়ুন এন্টি ইসলামিষ্টদের সঙ্গে ফাইট করতে এই আইডিটা খুলেছিলাম। কোনো দিনই কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। স্বপ্নেও ভাবিনি যুক্ত হব।

ডা. মাহমুদা মিতু আরও লেখেন, শাহবাগের আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ঘৃণা করতে করতেই রাজনীতি বুঝেছি। শেখ হাসিনাকে ঘৃণা করতে শিখেছি। শাপলা চত্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে শুরু করে সেই সময়কার এন্টি-ইসলামিস্টদের আচরণ দেখে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছি।

তিনি আরও লেখেন, আমার সেই ফেসবুক জীবনের ১৪ বছরের দাগকাটা অনেক ঘটনার মূল কেন্দ্রে ছিল ইসলামপন্থীদের ওপর অত্যাচার। সেই সময় আমি, যে জিন্সপ্যান্ট পরে ঘুরে বেড়ানো এক সাধারণ মেয়ে, শুধুমাত্র বিবেকের তাড়নায়ই শাহবাগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম।

২০২৪ সালের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনসিপির এই নেত্রী বলেন, ২০২৪ যেমন আমার জন্য এক ট্রমা, তেমনি সেসময়ের অত্যাচারের ভিডিও, ছবি, রং মেখে পড়ে থাকা সেই ডাইনিটার কথা, কিংবা বিশ্বজিৎকে মারধরের দৃশ্যও আমার জন্য ভয়াবহ ট্রমা। আমরা সেই সময় থেকেই একটা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। এসব বললেই আবার কেউ আমাকে জামায়াতি, ইসলামী আন্দোলন বা হেফাজতের লোক বলে ট্যাগ দেয়ার চেষ্টা করে।

আওয়ামী লীগপন্থীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত ১৭ বছরের আওয়ামী শাসনের মধ্যে আমার ফেসবুক জীবন ১৪ বছরের। এই ১৪ বছরে আমাকে হাজারবার রাজাকার বলা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪-এ মানুষ শহিদ হওয়ার পর, কোনো অবস্থাতেই এই শাহবাগীদের সেই পুরনো আওয়ামী ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে দেয়া হবে না। '৭১ আমাদের সবার চেতনার অংশ, কিন্তু একাত্তরকে বিক্রি করে আবার দমন-পীড়নের দিন ফিরিয়ে আনা যাবে না।

ডা. মিতু আরও লেখেন, চেতনার মন্দির ৩২ নম্বরকে ঘৃণার সঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঠিক সেভাবেই নতুন করে গড়ে ওঠা চেতনা-ব্যবসাও গুড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজাকার ন্যারেটিভ ধারণকারী যেকোনো ক্ষুদ্র গোষ্ঠী এবং আওয়ামী লীগের কালচারাল সেলের গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শাহবাগের যে ন্যারেটিভকে আজ বাংলাদেশের শিশুরাও ঘৃণা করে, সেই ন্যারেটিভ ফিরিয়ে আনা মানেই আওয়ামী লীগের কালচার আবার সক্রিয় করা। আর সেটা কোনোভাবেই হতে দেয়া যাবে না।

এফপি/ টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সরকারকে পুরোনো স্বৈরাচারের পথ ত্যাগের দাবি আনু মুহাম্মদের Aug 10, 2025
img
ধানের শীষে ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ প্রতারিত হয়নি: মীর হেলাল Aug 10, 2025
img
বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে : মোহাম্মদ শাহজাহান Aug 09, 2025
img
আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন Aug 09, 2025
img
নিউ মার্কেটে বিভিন্ন অস্ত্রের গুদামের সন্ধান Aug 09, 2025
img
দুর্নীতি রোধে আইসিসির সাবেক কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিল বিসিবি Aug 09, 2025
img
মালদ্বীপে বাংলাদেশের কনিষ্ঠতম রাষ্ট্রদূত হলেন নাজমুল ইসলাম Aug 09, 2025
img
দুর্নীতির অভিযোগ ৮ উপদেষ্টার বিরুদ্ধে, তালিকায় কারা আছেন: মাসুদ কামাল Aug 09, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ইতিহাস হয়ে থাকবে : ইউজিসি চেয়ারম্যান Aug 09, 2025
img
গাজীপুরে লাইনচ্যুত পদ্মা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ Aug 09, 2025
img
রোনালদো কখনও সমস্যা ছিল না : টেন হ্যাগ Aug 09, 2025
img
৯৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন মহাকাশ বিস্ফোরণে বেঁচে ফেরা লাভেল Aug 09, 2025
img
বিসিবির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তিতে টনি হেমিং, জানা গেল গামিনির ভবিষ্যৎ Aug 09, 2025
img
ঋতুপর্ণার বাড়ি নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে বিসিবি Aug 09, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৩, আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৩২৫ Aug 09, 2025
img
গাজা দখল ঠেকাতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যের ডাক তুরস্কের Aug 09, 2025
img
ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বিএনপি ও ইসলামি দল, রাজনীতিতে নতুন পালাবদল Aug 09, 2025
img
যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের প্রমাণ দিন, চ্যালেঞ্জ পাকিস্তানের Aug 09, 2025
img
তুষারের গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি নীলা ইস্রাফিলের Aug 09, 2025
img
দেড় মাস পর বড়পুকুরিয়া থেকে আবারও কয়লা উত্তোলন শুরু Aug 09, 2025