বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পাঠানো ৪৬ কোটি টাকা পাওনার নোটিশকে ভিত্তিহীন বলছেন চিটাগাং কিংসের মালিক সামির কাদের চৌধুরী। শুধু তাই নয়, চিটাগাং কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে যে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে সেটার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির চেয়ে বিসিবিকে বেশি দায়ী মনে করেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক।
লম্বা বিরতির পর গত বিপিএলে চিটাগাং কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নিয়েছিলেন সামির কাদের চৌধুরী। বিপিএলে এর আগে যখন দল নিয়েছিলেন তখনও পারিশ্রমিক বকেয়া সংক্রান্ত জটিলতায় নাম জড়িয়েছিল তার। তবুও বিসিবি তার সঙ্গে সমঝোতা করে দল নেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। কিন্তু সর্বশেষ বিপিএলে দল নিয়ে আবারও পারিশ্রমিক জটিলতায় চিটাগাং কিংস।
বিসিবির কাছে চিটাগাং কিংসের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং উপদেষ্টাসহ অনেকেই পারিশ্রমিক না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ইতোনধ্যে অনেক সমালোচনাও হয়েছে এটি নিয়ে।
পারিশ্রমিক বকেয়া থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেননি সামির কাদেরও। তবে এখানে তার চেয়ে বিসিবির দায় বেশি দেখছেন সামির।
সামিরের দাবি, বিপিএলে লভ্যাংশের কিছু অংশ এখনও বিসিবির কাছে পান তারা। সেই অংশ থেকে বাকি পেমেন্টগুলো করে দেয়ার জন্য বিসিবিকে ফেব্রুয়ারি মাসেই ফরম্যাট দেখিয়ে দিয়েছিলেন তারা। তবে সেটা এখনও কেন হয়নি জানেন না বলে জানিয়েছেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক।
তবে মেন্টর হিসেবে আসা শহীদ আফ্রিদির পুরো পেমেন্ট না পাওয়ার দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন সামির। দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে–সোমবার (১১ আগস্ট) গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এসব কথা জানান সামির। সামির বলেন, 'বিপিএলের রেভিনিউ শেয়ার ৬০-৭০% পেয়েছি, বাকিটা থেকে বিসিবির পেমেন্ট করার কথা, কী পরিমাণ তারা করেছে সেটা জেনে বিস্তারিত বলতে পারবো। আফ্রিদির পেমেন্ট বাকি আছে, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার, শুরুতে পেমেন্ট করেছি, পরে সে চলে যায়, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।'
বিপিএলের প্রথম দুই আসরেও পেমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতা ছিল চিটাগাং কিংসের। গত আসরে আসার আগে সেটা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্য মধ্যস্থতা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সামির৷ সেখানে তাকে সাড়ে তিন কোটি টাকা পরিশোধের কথা বলা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। তবে হুট করেই সেটা ৪৬ কোটি কেন হলো, সে ব্যাপারে নাকি কিছুই জানেন না তিনি। চুক্তির কাগজপত্র বিসিবির কাছে চাওয়া হলে পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
বিসিবি পরিচালকরাও এই টাকার অ্যামাউন্ট সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন সামির। দুপক্ষের মধ্যে ঠিকঠাক যোগাযোগ হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। তবে এখন বিসিবির পক্ষ থেকে তার সঙ্গে সমাধানের জন্য বসার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সামির।
তিনি বলেন, '২০১৮ সালে বিসিবি বকেয়ার বিষয়ে হাইকোর্ট থেকে স্টে-অর্ডার নিয়েছিলো, ফারুক আহমেদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয় যে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিতে হবে, এখন সেটা ৪৬ কোটি কিভাবে হলো এটা বিসিবিও জানেনা, আমার সঙ্গে বসতে রাজি হয়েছে তারা।'
এদিকে, বিপিএলের ভাবমূর্তি নষ্টের পেছনেও বিসিবির দায় দেখছেন চিটাগাং কিংসের মালিক, 'বিপিএলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বিসিবি, স্টে অর্ডারের মাঝে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে আদালত অবমাননা করেছে তারা, চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করতে বোর্ড থেকে এতোদিন পর আগ্রহ দেখিয়েছে, আমি খুশি।'
এফপি/ টিএ