বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও ক্ষমতার পালাবদলের জন্য যে সিস্টেম থাকা দরকার ছিল পূর্ববর্তীরা আমাদের হাতে সেই পদ্ধতিটা তুলে দিতেন ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আমাদেরকে ক্ষণে-ক্ষণে জীবন দিতে হচ্ছে। পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতার পালাবদল হলেও রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠতে হয়।
জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় রাজধানী ঢাকার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র এবং জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত স্বীকৃতি প্রদান ও আমাদের করণীয়— শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ পুনর্গঠনে অনেক সময় আমরা পেয়েছিলাম, ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচারের ঘোষণাপত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১৯৭২ সালে আমরা দেখলাম একদলীয় একটি সংবিধান প্রণয়ন করে নিজেদের সুবিধামতো আইনকানুন বলবৎ করে এ দেশে একটি ফ্যাসিজম কায়েম করে জনগণের রক্তের সঙ্গে প্রতারণা করেছে একটি দল। পরে যা পরিণতি হওয়ার তাই হয়েছে।
তিনি বলেন, এরপরও দেশের মানুষ ধৈর্য ধরেছে, একটি পরিবর্তন হবে বলে। ১৯৯০ সালে মানুষ আবার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে জীবন দিয়ে আরেকটি পরিবর্তন এনেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য স্বৈরাচারের পতনের পরও সেই স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আমরা তৎপরতা দেখেছি।
সাদ্দাম বলেন, আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম আমরা দেখলাম। এই ফ্যাসিজম বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকারগুলো নষ্ট করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে জনগণ আর আস্থা রাখতে পারেনি। সুতরাং কোনো রাজনৈতিক দলের আহ্বানে নয়, আপামর জনসাধারণ আবার রাস্তায় নেমে এসেছে স্বর্তস্ফূর্তভাবে। জনগণের রক্তে যখন আবার ফ্যাসিজম বিদায় নিয়েছে, তখন আরেকটি সুযোগ এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এসেছে দেশটাকে পুনর্গঠন করার।
একটি দল সংস্কার মেনে নিতে পারছে না দাবি করে ছাত্রশিবিরের এ শীর্ষ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সদিচ্ছার অভিপ্রায়ে কতগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। কিন্তু জুডিশিয়ারি, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডিফেন্স ফোর্স পুলিশ ও দুদকের যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো এসেছে, রাজনৈতিক দলের একটা অংশ তা মেনে নিতে পারছেন না।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি কোনো রাজনৈতিক দল সংস্কারের পথে বাধা সৃষ্টি করে, জুলাই সনদের ক্ষেত্রে তাদের দ্বিমত থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই জনগণের কাছেই যাওয়া উচিত। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ম্যান্ডেট হচ্ছে জনগণ। এ সরকার এসেছে জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে। এই সরকারের লাইবিলিটি ২০ কোটি জনগণ।
এমআর/এসএন