তারেক রহমান ও বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি চলছে

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলে শুনানি আজও হওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) এদিন শুনানি করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

আসাবিপক্ষের আইনজীবীরা চূড়ান্ত রায়ের আসামিদের খালাস পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেন। একই সাথে মামলা ও বিচারের নানা অসামঞ্জস্যতার কথাও তুলে ধরেন তারা।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান আশা করেন যে, মামলায় বেকুসর খালাসের যে রায় তা বজায় থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়েও।

এছাড়াও আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।

৩১ জুলাই বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়।

মামলার আগের কার্যক্রম-

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

এরপর এ মামলায় সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ।

নিম্ন আদালতের রায়-

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি-

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি-

শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-

প্রসঙ্গত: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী।

তাদের মধ্যে অনেকে হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যান।

এমআর/এসএন   

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রধান সমন্বয়ককে ‘অযোগ্য’ দাবি, ১৫ এনসিপি নেতা-কর্মীর পদত্যাগ Aug 21, 2025
img
৫ আগস্ট কারাগার থেকে পলাতক আসামি গ্রেপ্তার Aug 21, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে লড়ছেন যারা Aug 21, 2025
img
বাফুফের চিঠির জবাবে কিংসের কাঠগড়ায় ফেডারেশন ও কোচ Aug 20, 2025
img
ইনস্টাগ্রামে একে অপরকে ‘আনফলো’ হৃতিক-এনটিআরের! Aug 20, 2025
img
এআই নির্মিত চলচ্চিত্রে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ Aug 20, 2025
img
তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে : টুকু Aug 20, 2025
img
নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই : আসিফ মাহমুদ Aug 20, 2025
img
গণঅভ্যুত্থানের শিক্ষাই হলো জাতির সাথে প্রতারণা না করা: আযম খান Aug 20, 2025
img
ট্রাম্পের নিষেধ অমান্য করলেই মিলবে ৫ শতাংশ ছাড়! Aug 20, 2025
img
খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস হাসপাতালে ভর্তি Aug 20, 2025
img
জামায়াত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত: আবদুল হালিম Aug 20, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনে ২৮ পদে ৫০৯, হল সংসদে ১১০৯ মনোনয়নপত্র জমা Aug 20, 2025
img
মির্জা ফখরুলের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য জানালেন ডা. জাহিদ Aug 20, 2025
img
লিগস কাপের কোয়ার্টারে মাঠে নামছে মায়ামি, মেসিকে ঘিরে অনিশ্চয়তা Aug 20, 2025
img
জুলাই সনদ নিয়ে মতামত জমা দিয়েছে বিএনপি Aug 20, 2025
img
জুলাই সনদ নিয়ে মতামত জমাদানের সময় বাড়ল Aug 20, 2025
img
ভোটের মাঠে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চায় এবি পার্টি Aug 20, 2025
img
মাদকবিরোধী প্রচারে নেমে উল্টো সমালোচনার মুখে আলিয়া ভাট Aug 20, 2025
img
সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের ক্রেডিট আমার স্বামীর : সাদিয়া Aug 20, 2025