মার্কিন আদালতের রায়ে বিপাকে ৬০ হাজার অভিবাসী

মার্কিন আপিল আদালতের এক রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নেপাল, হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়ার প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসীর অস্থায়ী সুরক্ষা (টিপিএস) বাতিল হয়ে গেছে, ফলে তারা এখন বহিষ্কারের মুখে পড়েছেন।

বুধবার (২০ আগস্ট) সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক ৯ম মার্কিন সার্কিট কোর্ট অব আপিলস এক জরুরি স্থগিতাদেশ জারি করেন। এর ফলে নিম্ন আদালতের দেওয়া আগের আদেশ কার্যকর থাকছে না। অভিবাসী অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া ও নেপালের নাগরিকদের জন্য দেওয়া টিপিএস বাতিল করেছে।
এ রায়ের ফলে নেপালের প্রায় সাত হাজার নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরানোর সুযোগ তৈরি হলো, যাদের টিপিএস সুরক্ষা ৫ আগস্ট শেষ হয়ে গেছে। হন্ডুরাসের ৫১ হাজার এবং নিকারাগুয়ার তিন হাজার নাগরিকের সুরক্ষা ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। এরপর তারাও বহিষ্কারের আওতায় পড়বেন। আদালতের বিচারকরা লিখেছেন, ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই জেলা আদালত যে আদেশ দিয়ে অভিবাসীদের পক্ষে সুরক্ষা বাড়িয়েছিলেন, সেটি আপাতত স্থগিত থাকলো।

এর আগে গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি জেলা আদালত টিপিএস বাতিলের সিদ্ধান্ত নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিচারক তখন বলেন, হঠাৎ সুরক্ষা প্রত্যাহার করলে অভিবাসীরা ‘অপূরণীয় ক্ষতির’ শিকার হবেন। এতে শ্রমশক্তি ও সামাজিক অবদানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং সমাজও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে বুধবারের সংক্ষিপ্ত রায়ে আপিল আদালত কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি। এ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন আইন ও নীতিবিষয়ক কেন্দ্রের সহ-পরিচালক আহিলান আরুলানান্থাম বলেছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্তে কোনো যুক্তি নেই, কেন এটিকে জরুরি বলা হচ্ছে তাও স্পষ্ট নয়। এটি যথাযথ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং আমাদের মক্কেলরা এর চেয়ে বেশি প্রাপ্য।

টিপিএস সুরক্ষার আওতায় যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করা দেশগুলোর নাগরিকরা অস্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারেন। এতে তারা কাজ ও ভ্রমণের অনুমতিও পান।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই এই সুরক্ষা বাতিলে জোর দিচ্ছে, যাতে আরও বেশি অভিবাসীকে সরানোর সুযোগ তৈরি হয়। এর অংশ হিসেবে আফগান, হাইতিয়ান, ভেনেজুয়েলান এবং ক্যামেরুনের নাগরিকদের সুরক্ষা বাতিলেরও চেষ্টা চালিয়েছে প্রশাসন—যদিও এসব দেশে পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত ও ভয়াবহ।

ইএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
"আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক কথাবার্তা শুরু হয়ে গেছে" Oct 13, 2025
img
ঢাকায় আজ শুষ্ক আবহাওয়া, নেই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা Oct 13, 2025
img
শিক্ষা ভবন অভিমুখে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কর্মসূচি আজ Oct 13, 2025
img
‘কান্তারা চ্যাপ্টার ওয়ান’ দেখে অদ্ভুত আচরণ দর্শকের Oct 13, 2025
img
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Oct 13, 2025
img
মেক্সিকোতে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় প্রাণ গেল ৪৪ জনের, নিখোঁজ ২৭ Oct 13, 2025
img
৭০তম ফিল্মফেয়ার আসরে ‘কিং’ শাহরুখের উপস্থিতিতে উন্মাদনা Oct 13, 2025
img
গত তিন নির্বাচনের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে তদন্ত কমিশন Oct 13, 2025
img
সবার জন্য উন্মুক্ত হলো রোমান সাম্রাজ্যের ঐতিহাসিক ‘কমোডাস প্যাসেজ’ Oct 13, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর দিল্লি, চতুর্থ অবস্থানে রাজধানী ঢাকা Oct 13, 2025
img
নারী বিশ্বকাপে আজ প্রোটিয়াদের মুখোমুখি হবে জ্যোতিরা Oct 13, 2025
img
ফার্মগেট-রাজাবাজারে পরপর ককটেল বিস্ফোরণ, ছাত্রলীগকর্মী আটক Oct 13, 2025
img
গাজায় সংঘর্ষ চলাকালে প্রাণ গেল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের Oct 13, 2025
img
আজ থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস চলবে Oct 13, 2025
img
আজ ১৩ অক্টোবরে ইতিহাসের আলোচিত যত ঘটনা Oct 13, 2025
img
শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলায় ছাত্রশিবিরের নিন্দা Oct 13, 2025
img
জেনে নিন, দেশে কত দামে স্বর্ণ ও রুপা বিক্রি হচ্ছে আজ? Oct 13, 2025
img
আজ থেকে শুরু আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মবিরতি Oct 13, 2025
img
কুষ্টিয়ায় টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন Oct 13, 2025
img
গাজায় হামাসের সঙ্গে একটি গোত্রের সংঘর্ষে নিহত ২৭ Oct 13, 2025