নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানার একটি পর্নোগ্রাফি মামলায় টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিটে নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম পান্নুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আসামিদের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী আদালতের জেনারেল রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা (জিআরও) মো. সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মামলার বাদী শিক্ষক মামুন অর রশিদ আদালতে চার্জশিট নাকচ করে নারাজি আবেদন করেন। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রেজাউল করিম পান্নুর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উত্থাপন করেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হোসাইন ওই এসআইকে আদালতে হাজির হতে তলব করলেও তিনি উপস্থিত হননি। পরে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ মে হাতিয়া উপজেলার ম্যাকপার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি আইনে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা তার ও তার শিক্ষিকা স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি ও অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন।
প্রথম মামলায় আসামি করা হয় হাতিয়া উপজেলা প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম, প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন, প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর, শিক্ষক হাসান উদ্দিন বিপ্লব এবং সদর উপজেলার প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে। পরবর্তীতে আরও সাতজনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন বাদী।
কিন্তু চলতি বছরের ২৬ মার্চ এসআই রেজাউল করিম পান্নু চার্জশিটে ১২ জনকে বাদ দিয়ে শুধু প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
মামলার বাদী শিক্ষক মামুন অর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আসামি শরীফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জিন্নাত আরা বেগম চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকাশে এসআই রেজাউল করিমকে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এছাড়া কল রেকর্ড, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এবং অন্যান্য মাধ্যমে আরও কয়েক লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এসআই রেজাউল করিম ও ওসি মো. কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। প্রমাণ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিএ/টিকে