জুলাই গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে, ২৬ আগস্ট নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন-স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুল ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মোস্তাক আহমেদ, ফেনীর ব্যবসায়ী আহত নাসির উদ্দিন ও শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানা মো. সাঈদুর রহমান। এখন পর্যন্ত মোট জবানবন্দি দিয়েছেন ২৯ জন সাক্ষী।

জবানবন্দি শেষে তাদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা।

গত ২৫ আগস্ট অষ্টম দিনেও পাঁচজনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার ও শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম।

২৪ আগস্ট সপ্তম দিনে সাক্ষ্য দেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম ও কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম।

২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনে জবানবন্দি দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।

১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল ও রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। ১৭ আগস্ট চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন, সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।

৬ আগস্ট প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক। ৪ আগস্ট পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর চোখ হারানো পারভীনও সাক্ষ্য দিয়েছেন। ৩ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বীভৎস বর্ণনা তুলে ধরেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। তবে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন তিনি। কাঠগড়ায় তার উপস্থিতিতেই জবানবন্দি দিচ্ছেন সাক্ষীরা।

এর আগে, ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।

এমকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ, কী আলোচনা হলো? Sep 01, 2025
img
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়াল Sep 01, 2025
img
জনদুর্ভোগের আশঙ্কায় বিএনপির র‌্যালি কর্মসূচি বাতিল Sep 01, 2025
img
রিয়াল বেতিসে ফিরছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার অ্যান্টনি! Sep 01, 2025
img
যখনই বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার পথ তৈরি হয় তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয়: দুলু Sep 01, 2025
img

আদালতের রায়ে ট্রাম্পের ক্ষোভ

'শুল্ক ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যেত' Sep 01, 2025
শিবিরের ফরহাদের বিরুদ্ধে রিটের ব্যখ্যা দিলেন ফাহমিদা Sep 01, 2025
প্রচারণার ভিন্ন প্রথা, আকৃষ্ট হচ্ছে ভোটাররা Sep 01, 2025
আসছে বিশেষ কিছু, তবে গোপনই রাখলেন তিশা! Sep 01, 2025
img
পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Sep 01, 2025
নবীজিকে কেন আরবে পাঠিয়েছিলেন Sep 01, 2025
img
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত Sep 01, 2025
img
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সমান হারে বৃত্তি বণ্টনের নির্দেশ Sep 01, 2025
img
১৩০ মিলিয়ন পাউন্ডে ইসাককে দলে নিল লিভারপুল! Sep 01, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রতিক সময়ে খুবই সিরিয়াসলি নির্বাচন চাইছেন : জাহেদ উর রহমান Sep 01, 2025
img
দক্ষিণী ছবিতে নতুন ভরসা রুক্মিণী বসন্ত Sep 01, 2025
img
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ Sep 01, 2025
img
নিজের অভিনয় করা চলচ্চিত্রকে নায়ক বললেন ‘জঘন্য সিনেমা’ Sep 01, 2025
img

আবু আলম শহীদ খান

‘আ. লীগের তিন কোটি ভোট কারো কারো মাথাব্যাথা হতে পারে’ Sep 01, 2025
img

ডাকসু নির্বাচন

ফরহাদের প্রার্থিতা ডাকসুর গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: ফাহমিদা আলম Sep 01, 2025