ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোদির বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্কের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
ট্রাম্প আবারও দাবি করেছেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক একপাক্ষিক। তিনি বলেন, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা অব্যাহত রেখেছে- এসব কারণেই এই উচ্চ আমদানি শুল্ক চাপানো হয়েছে।
ভারত ও আমেরিকার বাণিজ্য কর্মকর্তারা যখন এই শুল্ক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন, তখনই ট্রাম্প একটি হুঁশিয়ারি দেন যে, দিল্লি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিলেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো ঘোষণা বাস্তবে আসেনি। এখন সেটা হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে।
ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, “ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে, যা আমি জানি। তারা আমাদের কাছ থেকে প্রচুর ব্যবসা করে নেয়। আমাদের কাছে বিশাল পরিমাণে পণ্য বিক্রি করে, কিন্তু আমরা তাদের কাছে খুব কমই কিছু বিক্রি করতে পারি। এখন পর্যন্ত পুরোপুরি একপাক্ষিক সম্পর্ক।”
তিনি আবারও ভারতকে ‘শুল্ক অপব্যবহারকারী’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমাদের ব্যবসায়ীরা ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে পারে না।” বিশেষ করে কৃষি ও দুগ্ধ শিল্পের ক্ষেত্রে ভারতীয় বাজার না খোলার বিষয়টি নিয়ে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “ভারত রাশিয়া থেকে বেশিরভাগ তেল ও সামরিক পণ্য কেনে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুব সামান্য কেনে। তারা এখন শুল্ক একেবারে শূন্য করতে চায়, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। এটা ওরা কয়েক বছর আগেই করা উচিত ছিল।’
এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো যখন চীনের তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে মোদি, শি ও পুতিনের হাস্যোজ্জ্বল ছবি ও বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপচারিতা আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে পড়েছে। যা বার্তা দিচ্ছে এসসিও সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে দাঁড়াতে চায়।
বিশেষ করে ভারত ও চীনের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্কের বরফ গলতে দেখা গেছে। চীন তিন বছর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-কে দিল্লি পাঠিয়েছে এবং মোদির এটি চীন সফর সাত বছরের মধ্যে প্রথম।
ভারত-চীন সম্পর্কের এই উন্নতি এখন পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য চুক্তির কথাও সামনে এনেছে, যা ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। পৃথকভাবে, এই দুই এশীয় দেশ বিশ্বে অন্যতম বৃহৎ বাজার এবং তাদের মধ্যে রপ্তানি বাধা কমলে বাণিজ্য বাড়বে।
ইএ/এসএন