সীমানা পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে ঝিনাইদহের সবজি

ঝিনাইদহে মাঠের পর মাঠ সবজি ক্ষেত। সময়ের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক। পান, কলা এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হলেও প্রান্তিক কৃষকরা এখন ঝুঁকে পড়ছে সবজি চাষে। বদলে গেছে এ অঞ্চলের সবজি চাষের পদ্ধতি। কৃষি বিভাগের জৈব কৃষি ও জৈবিক বালাই দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে। যে কারনে বাণিজ্যিক ভাবে অনেকেই এখন সবজি চাষ শুরু করেছেন। এসব সবজি দেমের সীমানা পেরিয়ে রপ্তানী করা হচ্ছে দূর পরবাসে।

ঝিনাইদহে উৎপাদিত বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, টমেটো, বেগুনসহ সব ধরণের সবজি চাষ হচ্ছে জৈব পদ্ধতিতে। এতে করে দিন দিন এই সবজির চাহিদা বাড়ছে। গুনে মানে উন্নত এই সবজি দামেও সস্তা। যে কারণে খুব সহজেই এসব সবজি এখন বিদেশের বাজারে চলে যাচ্ছে।

জেলার সদর উপজেলার ঘোড়শাল, নগরবাথান, বৈডাঙ্গা, হলিধানী, গোয়ালপাড়া, শৈলকুপা উপজেলার মদনডাঙ্গা, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজারে বসছে সবজির বড় বড় হাট। এছাড়া কোটচাঁদপুর, হরিণাকুন্ডু ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারেও সবজি বেচাকেনা জমে উঠেছে। এসব হাট থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা সবজি কিনে তা বিদেশে রপ্তানী করছেন। বিশেষ করে এসব সবজি এখন বেশি রপ্তানী হচ্ছে মালয়েশিয়া।

জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র নতুন হাটখোলায় রয়েছে বড় বড় সবজির আড়ৎ। এসব আড়তে সবজি সংরক্ষণ করার পর তা ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বড় শহরে পাঠানো হয়। এছাড়া সবজির বড় একটি অংশ মালয়েশিয়ায় রপ্তানী করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম চালানে ২৭ টন টমেটো মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৪৫০ বাঁধাকপি রপ্তানী করা হয়।

সদর উপজেলার বেতাই গ্রামের জুলফিকার আলী বলেন, প্রথমবারের মত তার ক্ষেতে ফলানো সবজি মালয়েশিয়ায় রপ্তানী হয়েছে। এটা ভেবেই আমার ভালো লাগছে। দাম কম হলেও আমি খুশী।

একই উপজেলার পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামের সবজি চাষী জালাল উদ্দীন বলেন, দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেছিলাম। এরমধ্যে বাঁধাকপিই বেশি। প্রথম দিকে ভালো দাম পেয়েছি। এখন আর দাম তেমন নেই।

জেলা শহরের পার্শ্ববর্তী কোরাপাড়া গ্রামের কৃষক ফজর আলী জানান, আগাম পটল বাজারে তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। তাই তিনি এখন মাঠেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।


ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, করোনা মহামারিতে চাষীরা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এখন কিছুটা হলেও তারা লাভের মুখ দেখছেন। তবে রবি মৌসুমের শেষ দিকে সবজির বাজার আরেকটু ভালো হবে।

জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি মৌসুমে ফুলকপি, বাধাঁকপি, বেগুন, মুলা, লাউ, ব্রোকলি, শিম, গাজর, লালশাক, পালং শাক, ঢেড়স, করলা উৎপাদন লাভজনক হয়েছে। জেলার ৬টি উপজেলায় ১১ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। যা থেকে দুই লাখ ১৫ হাজার ২৪০ টন সবজি উৎপাদন হয়েছে।

 

টাইমস/এফএ/এসএন

Share this news on: