নিয়মিত চা পানের অভ্যাস বাড়াবে আয়ু

বাংলাদেশীদের চায়ের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে, ২-৩ কাপ চা আমাদের প্রতিদিনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পানীয়টির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটেছিল উপনিবেশিক শাসনামলে। তারপর থেকে এটি আমাদের স্বভাবের সঙ্গে মিশে গেছে।

ইউরোপীয় জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে যে, চা পান করা স্বাস্থ্যকর ও দীর্ঘ জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। একজন চা প্রেমীর কাছে এই খবরটি নিশ্চয়ই আনন্দের।

এই গবেষণায় চীন-পিএআর প্রকল্পের এক লাখেরও বেশি অংশগ্রহণকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা ক্যান্সারের ইতিহাস নেই। অংশগ্রহণকারীদেরকে দু’টি বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছিল- অভ্যাসগত চা পানকারী (সপ্তাহে তিনবার বা তার বেশি) এবং অনিয়মিত পানকারী (সপ্তাহে তিনবারেরও কম)।

বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, ৫০ বছর বয়সী নিয়মিত চা পানকারীরা অনিয়মিত পানকারীদের তুলনায় গড়ে ১.৪১ বছর পরে করোনারি হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, যারা অভ্যাসগতভাবে চা পান করেন তাদের মধ্যে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঘটনা ২০% কম ছিল। অভ্যাসগত চা পানকারীদের অন্যান্য কারণে মৃত্যু ঝুঁকিও বাকীদের তুলনায় ১৫% কম ছিল।

গবেষণার প্রধান লেখক বেইজিংয়ের চাইনিজ একাডেমী অফ মেডিকেল সায়েন্সের জিনিয়াং ওয়াং নিশ্চিত বলেন, “অভ্যাসগত চা খাওয়া হৃদরোগ জনিত অসুস্থতার ঝুঁকি এবং অন্য সব মৃত্যু ঝুঁকি কম করার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। নিয়মিত চা পানকারীদের মধ্যে যারা ‘গ্রিন-টি’ পান করেন তারা বেশি লাভবান হয়ে থাকেন।”

“চায়ের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবগুলি অভ্যাসগত চা পানকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর বলে মনে করা হয়। কারণ চায়ের মূল জৈব কার্যকরী যৌগ ‘পলিফেনল’ মানবদেহে দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষিত হয় না। সুতরাং, যাদের ঘনঘন চা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা এই প্রতিরক্ষামূলক সুফল সাধারণত বেশি পেয়ে থাকেন,” বলে জানিয়েছেন গবেষণার সিনিয়র লেখক ডংফেং উ।

বিশ্লেষণে আরও বলা হয় যে, গ্রিন টি-পানকারীরা কালো চা বা অন্যান্য জাতের চা পানকারীদের তুলনায় দীর্ঘায়ু লাভ করে থাকেন। কারণ গ্রিন টিতে তুলনামূলকভাবে পলিফেনলের পরিমাণ বেশি থাকে। অধিকন্তু, কালো চা সাধারণত দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়, যা হৃদরোগের ক্ষেত্রে চায়ের অনুকূল সুফলগুলি নষ্ট করে দেয়। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

 

টাইমস/এনজে/জিএস 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভাইকে তো পাব না, অন্তত বিচার যদি পাই: বিশ্বজিতের ভাই Dec 10, 2025
img
ইতালি থেকে যুদ্ধবিমান ইউরোফাইটার টাইফুন কিনছে বাংলাদেশ Dec 10, 2025
img
নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস নয়: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা Dec 10, 2025
img
প্রকৌশল শিক্ষাকে সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল হতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 10, 2025
img
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছুটি নিয়ে দুঃসংবাদ Dec 10, 2025
img
‘রাতের ঘুম উড়েছে’, ক্যাটরিনাকে বুকে টেনে বিবাহবার্ষিকীতে পোস্ট ভিকির Dec 10, 2025
img
জাতীয় ভ্যাট দিবস আজ Dec 10, 2025
img
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭৪ রানে গুটিয়ে দাপুটে জয় ভারতের Dec 10, 2025
img
প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ আশপাশের এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ Dec 10, 2025
img
খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জে যেতে নিষেধ করেছিলেন চিকিৎসকরা: তারেক রহমান Dec 10, 2025
img
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম পদত্যাগ করছেন আজ Dec 10, 2025
img
টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনন শিল্পকে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিল ইউনেস্কো Dec 10, 2025
img
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কবার্তা Dec 10, 2025
img
ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল কিনবে সরকার Dec 10, 2025
img
কানাডা ও সৌদি আরব থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার Dec 10, 2025
img

মোহাম্মদপুরের মা-মেয়ের ঘটনা

১৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ আদালতের Dec 10, 2025
img

বিএনপি প্রার্থী আমিনুল ইসলাম

আমি যা বলব তাই আইন, আল্লাহর হুকুম Dec 10, 2025
img
চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়ন কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনতে নগর সেবা ব্যবস্থা জরুরি : চসিক মেয়র Dec 10, 2025
img

ভূমিকা চাওলা

অতিরিক্ত জিনিস একসময় মানুষকে গ্রাস করে Dec 10, 2025
img
বিপিএল মাতাতে আসছেন ভারত ও পাকিস্তানি উপস্থাপক Dec 10, 2025