নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনায় মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও তিতাস কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, মসজিদ কমিটির নেতারা আগে থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিল।
তবে মসজিদ কমিটির সভাপতি বলছেন, বারবার তিতাস গ্যাস কৃর্তপক্ষকে সমস্যার কথা বলা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। কাজ করে দেয়ার জন্য উপরন্ত তারা ঘুষ দাবি করেছে। তিতাস কর্তৃপক্ষ যদি অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পদক্ষেপ নিতো, তবে এ ঘটনা ঘটতো না।
এ ব্যাপারে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি গণমাধ্যমকে জানান, তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফতুল্লা থানার তল্লা এলাকার আকাশ বাতাসে শুধু আহাজারির আওয়াজ ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৪ জন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।
নিহত ও চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যুতে অনেক পরিবার এখন ভবিষ্যত নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সংসার নিয়ে দোটানার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে তাদের দিন।
মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতদের পরিবার জানায়, এ ঘটনার জন্য মসজিদ কমিটি ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে। তারা কেউই দায় এড়াতে পারে না। গ্যাসের লিকেজের বিষয়টি তিতাসকে জানানো হলেও তারা সময় মতো লাইন মেরামত করেনি। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা জেনেও মসজিদ কমিটি মুসল্লিদের সতর্ক করেনি। এঘটনার জন্য তিতাস ও মসজিদ কমিটি সমান ভাবে দায়ি।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘ নয় মাস ধরে তিতাসের গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে কাউকে কিছুই জানানো হয়নি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান, তিতাস কর্তৃপক্ষকে গ্যাসলাইন লিকেজের বিষয় জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে এশার নামাজ চলাকালে গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে ফতুল্লার বায়তুস সালাহ জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ৩৮ জন মুসল্লী অগ্নিদগ্ধ হন।
টাইমস/এসএন