নিরাপদে মাদক সেবন-বিক্রি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

গতবছরের ১৫ মে বাংলাদেশের সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল মাদকাসক্তি ও মাদকদ্রব্যের কেনাবেচা দমন করা। অভিযান পরিচালনার সময় কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ৩০০ লোক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই খুদে ব্যবসায়ী। মাদকের গডফাদার হিসেবে যারা পরিচিত, তারা অভিযানের শুরুতেই গা ঢাকা দিয়েছেন। মাদকসংক্রান্ত অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসা ও সেবনে রাশ টেনে ধরা যায়নি। একই অবস্থা রাজধানী পুরান ঢাকারও।

পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকা নিয়ে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। কিন্তু রাত হলেই বিভিন্ন অলিগলিতে ভিড় জমায় মাদকসেবীরা। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এখনো নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডটি পুরান হোসনি দালান রোড, অরফানেজ রোড, কমল দাহ রোড, নাজিমউদ্দিন রোড, গিরদা উর্দূ রোড, জয়নাগ রোড, বকসীবাজার রোড, বকসীবাজার লেন, আমালাপাড় সিট রোড, তাতখানা লেন, উমেশ দত্ত রোড, নবাব বাগিচা, নূর ফাতা লেন, পলাশী ফায়ার সার্ভিস এলাকা নিয়ে নিয়ে গঠিত।

ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে এখনো প্রকাশ্যেই ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক কেনাবেচা হচ্ছে।

হোসেনি দালান রোডের বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, বর্তমানে ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা মাদক। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা দিন দিন বেড়েই চলছে।

একই অভিযোগ উমেশ দত্ত রোডের বাসিন্দা কলিম উল্লাহ’র।

তিনি জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই তাদের রোডে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের তৎপরতাও বৃদ্ধি পায়।

হোসেনি দালান সমাজকল্যাণ সংস্থা ও পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী নানা কৌশলে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করছেন। আর এসব মাদকের ক্রেতাদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ। মাদকের খরচ মেটাতে গিয়ে অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা। প্রতিবাদ করেও তেমন ফল মিলছে না।’

তিনি বলেন, চারজন নৈশ প্রহরী হোসেনি দালান এলাকা পাহারা দেয়। রাত হলেই মাদকসেবী ও কারবারিরা বিভিন্ন অলিগলিতে মাদক সেবন ও কেনাবেচা শুরু করে দেয়। প্রহরীরা বাধা দিতে গেলে তোপের মুখে পড়েন।’

কী করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী?

ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ জোনের উপকমিশনার ইব্রাহিম খান জানান, সম্প্রতি পুরান ঢাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে মাদকবিরোধী সমাবেশ করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের তালিকা তৈরী করে প্রতিটি অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তবে তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

র‍্যাব-১০ এর কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের উমেশদত্ত রোডে অভিযান চালিয়ে চার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। মাদক ব্যবসার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

 

টাইমস/ কেআরএস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ