রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘অভিবাসনের গল্পে স্বপ্ন থাকে, থাকে শিকলের ঠাণ্ডা ধাতব শব্দ।
২ আগস্ট মধ্যরাতে ঢাকার আকাশে নেমে আসা মার্কিন সামরিক পরিবহন বিমান সি১৭ থেকে যখন শিকলবন্দি বাংলাদেশিদের নামানো হলো, আমরা দেখলাম অপমানের এক কোরিওগ্রাফি। হাতকড়া, কোমরে শিকল- যেন অপরাধী ফেরত আসছে। অথচ বাস্তবতা এরা মূলত প্রশাসনিক নীতি ভঙ্গকারী ফৌজদারী অপরাধী নয়।’
বৈধ কাজগপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে দেশে। তাদের হাতে থাকে হাতকড়া, কোমরে-পায়ে শিকল বাঁধা। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে কথা বলেন তিনি।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিতে অমানবিক বা অপমানজনক আচরণ নিষিদ্ধ।
ইউডিএইচআর ও আইসিসিপিআর দুটোতেই স্পষ্ট ভাষায় আছে এই নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু শিকলের অতিরিক্ততা যখন নিরাপত্তা নয়, শো কারেকশন তখন সেটা মানবিক মর্যাদার বিরুদ্ধে যায়।’
জিল্লুর আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিক্রিয়ায় চুপচাপ, এটাও এক অস্বস্তির বিষয়। প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ওপর দাঁড়ানো অর্থনীতি, অথচ তাদের মর্যাদা হানিতে রাষ্ট্র-সমাজ বড় কোনো বক্তব্য দিল না।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব এখানে দুই স্তরে। এক- কূটনৈতিক প্রতিবাদ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে কেস তোলা। দুই- ফিরে আসা মানুষদের পুনর্বাসন ও সামাজিক পুনর্গঠনের প্রোগ্রাম। কারণ শিকল শুধু লোহার নয়, লজ্জারও। যে ছেলেটি ভিটে বন্ধক রেখে গিয়েছিল ফিরে এসে যখন মায়ের সামনে হাতকড়া দেখায়, তখন তার পরাজয় নয় আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতা ধরা পড়ে।’
টিকে/