কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে সেটিকে অবহেলা করলে চলবে না। শরীরে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে হৃদরোগ, স্ট্রোক কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। আর এটি এখন শুধু বয়স্কদের সমস্যা নয়, ৩০ বছরের আগেই অনেক তরুণ-তরুণীর শরীরেও কোলেস্টেরল মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়ছে। এই সমস্যা সামলাতে শুধু ওষুধ খেলে হবে না, ডায়েটেও আনতে হবে সচেতন পরিবর্তন।
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে অন্তত একটি সবজির পদ থাকা জরুরি। কারণ বেশ কিছু সবজিতে এমন উপাদান রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর। চলুন, জেনে নিই যেসব সবজি নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কপিজাতীয় সবজি (ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি)
এই সবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
ফাইবার রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি নিয়মিত খেলে হজমও ভালো থাকে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
ঢেঁড়স
ঢেঁড়সে থাকে দ্রবণীয় ফাইবার, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকর। এটি হজমের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
গ্রীষ্মকালে সহজলভ্য এই সবজির নানা পদ রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।
বেগুন
বেগুন সারা বছর পাওয়া যায় এবং এর মধ্যেও রয়েছে দ্রবণীয় ফাইবার। এটি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা রক্ষা করে। নিয়মিত বেগুন খেলে ব্লাড প্রেসারও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
গাজর
গাজরে রয়েছে পেকটিন নামক ফাইবার, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বের করে দিতে সাহায্য করে।
পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
পালং শাক
পালং শাকে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবার ও বিভিন্ন ভিটামিন-মিনারেল। এটি কোলেস্টেরল কমানোর পাশাপাশি ধমনিতে ব্লকেজ প্রতিরোধ করে, রক্তচাপ ঠিক রাখে এবং হার্টের দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমায়। সারা বছর পালং না পেলেও যেকোনো শাকই উপকারী।
উল্লিখিত সবজিগুলোর পাশাপাশি ঝিঙে, পটোল, লাউয়ের মতো দেশি সবজিও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ডাল খেলে ফাইবার পাওয়া যায়, যা চর্বি কমায়।
মাছ, বিশেষ করে ওমেগা-৩-সমৃদ্ধ মাছ (যেমন- রুই, কাতলা বা সামুদ্রিক মাছ) কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য খুবই ভালো।
মনে রাখা জরুরি
শাক-সবজির সঙ্গে সামান্য ডাল ও মাছ রাখলে ডায়েট হয়ে উঠবে আরো কার্যকর।
মৌসুমি সবজি ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো।
অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
যেকোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ওপরের ডায়েট গাইডলাইন শুধু সাধারণ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য সহায়ক হতে পারে।
ইএ/টিকে