চল্লিশের পর আস্তে হাঁটা দ্রুত বার্ধক্যের লক্ষণ

চল্লিশ বছর বয়সের পর থেকে মানুষ কতটা জোরে হাঁটছে, তা থেকে বোঝা যায় তাদের দেহ ও মস্তিষ্ক কতটা বার্ধক্যে উপনীত হচ্ছে। চলাফেরার গতির উপর সাধারণ পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা বার্ধক্যের প্রক্রিয়া এমন পরিমাপ করতে সক্ষম হয়েছেন। আন্তর্জাতিক গবেষক দলটি একে ‘আশ্চর্যকর ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

ডাক্তাররা অনেক সময় ৬৫ বছরের থেকে বেশি বয়স্ক ব্যক্তির চলাফেরার গতির উপর ভিত্তি করে তার সার্বিক স্বাস্থ্যের অবস্থা পরিমাপ করেন। কারণ এটি পেশির শক্তি, ফুসফুসের কর্মক্ষমতা, ভারসাম্য, চোখের জ্যোতি প্রভৃতির অবস্থা সম্পর্কে নির্দেশ করে।

বৃদ্ধ বয়সে হাঁটার গতি কমে গেলে তা শরীরের জন্য খুবই ভয়ানক ইঙ্গিত। নিউজিল্যান্ডের ৪৫ বছর বয়সী এক হাজার ব্যক্তির উপর নিরীক্ষা চালিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

একইসঙ্গে নিরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক পরীক্ষা, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার পরীক্ষাসহ মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়। শিশু বয়স থেকেই কয়েক বছর পরপর তারা এসব পরীক্ষা করিয়ে আসছেন।

লন্ডনের ডিউক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর টেরি ই মফিট বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে, বৃদ্ধ বয়সের আগে আস্তে হাঁটা সমস্যার ইঙ্গিত।”
৪৫ বছর বয়সে লোকদের হাঁটার গতি ভিন্ন ভিন্ন রকম, এমনকি অনেকের হাঁটার গতি ঘণ্টায় দুই মাইল পর্যন্ত হতে পারে।

সাধারণভাবে আস্তে হাঁটা মানে “দ্রুত বার্ধক্যের” লক্ষণ। যারা জোরে হাঁটেন তাদের তুলনায় আস্তে হাঁটা লোকদের ফুসফুস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দাঁত প্রভৃতি খুব বাজে অবস্থা। সব থেকে দুঃসংবাদ হলো- ব্রেইন স্ক্যানে দেখা গেছে, আস্তে হাঁটা লোকদের মস্তিষ্ক দ্রুত বুড়ো হয়ে যাচ্ছে।

গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, যেসব শিশু আস্তে অর্থাৎ যাদের চলাফেরার গতি ১.২ কি.মি. এর মধ্যে, গড় হিসাবে ৪০ বছর পরে তাদের আইকিউ যারা দ্রুত হাঁটে (১.৭৫ কি.মি.) তাদের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কম হয়।

তরুণ বয়সে চলাফেরার গতি নির্ণয়ের মধ্য দিয়ে চিকিৎসার দ্বারা বার্ধক্যের গতি কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। এ উদ্দেশ্যে ডায়েট নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন উপায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এটি একটি প্রাথমিক লক্ষণ, যা থেকে দেহ ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব হবে এবং এটি প্রথম থেকেই জীবন আচরণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সুস্থ দেহ ও মস্তিষ্ক লাভে সহায়তা করবে। তথ্যসূত্র: বিবিসি.কম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: