বরগুনা জেলাকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণার পর জুলাই আগস্টের দিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও আবারও চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তারা সকলেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাখাল বিশ্বাস অপূর্ব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃতরা হলেন- পাথরঘাটা উপজেলার আমড়াতলা নামক এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে হাসান (২৫), কাকচিড়া ইউনিয়নের হরিদ্রা নামক এলাকার নাসির মোল্লার ছেলে সিদ্দিক মোল্লা (৪৫) এবং পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিত এলাকার আব্দুর রশিদ মোল্লার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৭৫)।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাতে সিদ্দিক মোল্লা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে রাতেই বরিশালে রেফার্ড করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। তবে স্বজনরা তাকে বরিশালে না নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখলে সকালে তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে রাতে হাসান নামে আরেক রোগী ডেঙ্গু উপসর্গ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে রক্ত বমি শুরু হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল রেফার্ড করেন চিকিৎসক। পরে বরিশাল যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় হাসানের। এছাড়াও একইদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা নুরজাহান বেগম নামে আরও একজনের বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। এদের দুজনেরই ডেঙ্গু উপসর্গ থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডেঙ্গু পরীক্ষার আগেই তাদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাখাল বিশ্বাস অপূর্ব বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়া তিনজনই গতকাল রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এদের মধ্যে সিদ্দিক নামে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই বরিশালে রেফার্ড করা হলেও বরিশাল না নিয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। তার প্রেশার একদমই কমে গিয়েছিল। অপর দুইজনের ডেঙ্গু উপসর্গ থাকলেও তাদের পরীক্ষার আগেই মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে তাদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, এ বছর বরগুনায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৯২৪ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ হাজার ৭৮৯ জন আক্রান্ত রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। এদের মধ্যে শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন রোগী। বর্তমানে জেলায় মোট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩৫ জন। তবে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে জেলার আরও অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এমকে/টিএ