অবশেষে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের শেষের দিকে ভারত ও চীনের মাঝে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হতে যাচ্ছে। দুই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ আলোচনার পর উভয় পক্ষ এই বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাম্প্রতিক বৈঠকের পর চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী দেশের এই পদক্ষেপকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে দুই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের মাঝে দফায় দফায় কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ পুনঃস্থাপন ও নতুন বিমান সেবা চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
নতুন চুক্তির আওতায় ভারতীয় ও চীনের বিমান সংস্থাগুলো নির্ধারিত রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালাতে পারবে। শীতকালীন সূচি থেকেই এই সেবা শুরু হবে বলে জানিয়েছে দিল্লি। তবে বিমান সংস্থাগুলোকে দুই দেশের নির্ধারিত সব ধরনের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য শর্ত মেনে চলতে হবে।
এই চুক্তির পরপরই ভারতের বিমান সংস্থা ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা-গুয়াংজু রুটে দৈনিক বিরতিহীন ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষে অনুমোদন পাওয়া গেলে শিগগিরই দিল্লি-গুয়াংজু রুটেও সরাসরি ফ্লাইট শুরু করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইন্ডিগো বলেছে, এয়ারবাস এ-৩২০ নতুন বিমান ব্যবহার করে চীনে আকাশপথে যাত্রীসেবা দেবে তারা। দুই দেশের বাণিজ্যিক ও কৌশলগত ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব এবং পর্যটন খাতের পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে এই উদ্যোগ।
কোভিড-১৯ মহামারি ও ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার পর থেকে দুই দেশের মাঝে সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয় দেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, আকাশপথে যাত্রীসেবা পুনরায় চালুর ফলে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।
এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মাঝে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল স্থগিত ছিল। যে কারণে ব্যবসা, পর্যটন ও শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক যোগাযোগ ব্যাহত হয়। তবে নতুন এই ঘোষণায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সংকট নিরসনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
ইএ/টিকে