পঞ্চগড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুষ্ঠানে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিতরণ কোম্পানি নেসকোকে রীতিমতো কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজকের পর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান এখানে যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করে ওই প্রতিষ্ঠান এ অঞ্চলে থাকবে না হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে নিজ জেলা পঞ্চগড়ে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১৬০ কিলোমিটার লংমার্চ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাসিনার গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আয়না ঘরের নিপীড়ন-নির্যাতনের সাথে জড়িত সেনা অফিসার ও জেনারেলদের বিচার কার্যকর করতে হবে বলেও জানান সারজিস আলম।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে আমরা শ্রদ্ধার জায়গায় রাখি। কিন্তু যারা শেখ হাসিনার সময়ে গুম, খুন ও নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের বিচার না হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং রাষ্ট্রের সম্মানের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান কলুষিত হবে। এর গায়ে কালো দাগ থাকবে। আমরা অনুরোধ করবো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজ জায়গা থেকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করুক।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরকে আমি সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। তিনি খুব দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করবেন। তার পেশাদারিত্বের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। এ সময় পঞ্চগড়ে এনসিপির অনুষ্ঠানে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়ায়, পরপর তিনটি প্রোগ্রামে একই ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ তুলে সারজিস বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকোকে খারাপ ভাষায় গালি দেন। একই সঙ্গে নেসকোর মালিক ও তার বাবাকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নেসকোকে দেউলিয়া বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আপনারা রাজনৈতিক চাটুকার ও পা-চাটা। এ জন্যই এনসিপির অনুষ্ঠানে এটা প্রতিবারই হয়। আজকের পর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান পঞ্চগড়ে যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করে, ওই প্রতিষ্ঠান পঞ্চগড়ে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, যখনই চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা হয়, তখনই এভাবে বাধা দেওয়া হয়। সারজিস আরও বলেন,
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের সময় এক-দুই দিন পেছানো গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো এর বাস্তবায়ন। এর আইনগত ভিত্তি থাকা দরকার। এটি জনগণের সনদ। জনগণ যেন এটা পায়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। রাজনৈতিক দল হিসেবে যেমন আমরা এটি চাই, তেমনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকেও তা নিশ্চিত করে দায়িত্ব ছাড়তে হবে। অন্যথায় ছাত্র-জনতার সাথে এটি বড় বিশ্বাসঘাতকতা হয়ে থাকবে। এর আগে, লংমার্চের প্রথম পথসভায় তেঁতুলিয়ার তেঁতুলতলায় চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, সিন্ডিকেটকারী ও দখলদারদের হাত ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, জনগণের রক্তচোষা চাঁদাবাজ, সিন্ডিকেট, মাদকচক্র ও দুর্নীতিবাজদের আর ছাড় নয়।