বিগত সরকারের আমলে হত্যা, গুম-নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
লন্ডনভিত্তিক এই সংস্থাটি বলছে, অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করার এই ঘটনা দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচারের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়ার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটলো, যেখানে জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনীর সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হলো।
সংস্থাটি মনে করে, এই পদক্ষেপটি ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড মেনে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, বিচার অবশ্যই যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তার সঙ্গে পরিচালিত হতে হবে, বেসামরিক আদালতে হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার অঙ্গীকার অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা একটি মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
সেদিনই এই তিন মামলায় ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছিল প্রসিকিউশন।
এরপর ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৫ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) আছেন।
পরদিন ১২ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পিএ/এসএন