যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেেছেন, “প্রতিবার আমি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলি, আলাপ ভালো হয়; কিন্তু তারপর কিছুই ঘটে না, কিছুই এগোয় না,”
বুধবার ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকটি ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি আলোচনা নিয়ে।
এদিকে রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েল এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের এক দিন পর, যেখানে তিনি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বুদাপেস্ট বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “এখন হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সময়।”। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে ট্রেজারি আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানাতে। আমরা আমাদের মিত্রদের আহ্বান জানাচ্ছি এই নিষেধাজ্ঞায় যোগ দিতে এবং তা মেনে চলতে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাশিয়ার জ্বালানি খাতে কার্যক্রম পরিচালনার কারণে লুকঅয়েল ও রসনেফটের ৩৪টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে।
বুধবারের শুরুর দিকে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে একমত হয়েছে, যাতে গ্যাস ও তেল আমদানি আরও হ্রাসের অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নতুন প্যাকেজে চীনের তেল শিল্পের চারটি কোম্পানিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যারা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলার অভিযোগে অভিযুক্ত। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েনের প্রস্তাব অনুযায়ী, তালিকায় কিছু ভারতীয় কোম্পানিও যুক্ত হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষের প্রতিই ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন, যদি শান্তিচুক্তি না হয়, তাহলে মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তবে হোয়াইট হাউস এখনো পর্যন্ত এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ট্রাম্প জোর দিয়েছেন যে, তার লক্ষ্য সংঘাত বাড়ানো নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান; যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা হয়তো কার্যকর নাও হতে পারে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেন সংঘাতের একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার “সত্যিকারের আগ্রহ” ও সংঘাতের মূল কারণ বুঝতে চাওয়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে। মস্কো একই সঙ্গে কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের অভিযুক্ত করেছে “সৎভাবে আলোচনায় না বসা” এবং সংঘাত দীর্ঘায়িত করার জন্য শান্তি প্রচেষ্টা নষ্ট করার চেষ্টার অভিযোগে।
গত সপ্তাহে ফোনালাপে ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হাঙ্গেরিতে এক অনির্ধারিত তারিখে বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হন, যা সংঘাত সমাধানের পথে অগ্রগতি আনতে পারে। তবে পরবর্তীতে ট্রাম্প জানান, “এখনই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঠিক সময় নয়।” তিনি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এখনো বৈঠক সম্পর্কে “চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি,” কারণ তিনি চান না এটি “সময় নষ্টের” বৈঠক হয়ে উঠুক।
এমকে/এসএন