ফ্যাসিবাদবিরোধী আসিফ মাহমুদও এখন ফ্যাসিস্ট-লুটপাটকারী : তারেক রহমান

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে ফ্যাসিস্ট ও লুটপাটকারী বলে আখ্যা দিয়ে আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক মো. তারেক রহমান বলেছেন, আসিফ মাহমুদ তার এলাকা মুরাদনগরের ডজন খানেক বিএনপি নেতাকে আটক করিয়েছেন। তার পিএস-এপিএসের দুর্নীতি মামলা এখন ডিপ ফ্রিজে। সুতরাং কেউ কারো চেয়ে কম ফ্যাসিস্ট নয়। শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।

তারেক রহমান তার পোস্টে বলেন, ৫ আগস্টের আগে যে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল, মুক্তি পেয়ে রাতভর সেই পুলিশকে অবরুদ্ধ্ব অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছি। জেল থেকে বের হবার সময় বাহিরে পা ফেলেই শুকরিয়া আদায় করেছি। যারা আমার উপর নিপীড়ন করেছে, মুক্তির শুকরানা হিসাবে তাদের প্রতি ক্ষোভ বরফের মতো গলে ফেলেছি। বেঁচে আছি এই তো অনেক, প্রতিমুহুর্তে শুকরিয়া আদায় করি।

তিনি বলেন, চুক্তি ছাড়া শান্তি হয় না, জিদ হল ধারাল ব্লেড, সেই ব্লেডকে জড়িয়ে ধরলে ক্ষতবিক্ষত হওয়া ছাড়া উপায় নাই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিজয়ী হতে আপনি জিদ করতেই পারেন। রক্ত ঝড়া আপনার অভ্যাস। জনগণ এই লড়াই আর চায় না।

জনগণ জনম জনম লড়াই করতে গণ অভ্যুত্থানে অংশ নেয়নি। আপনার জয়-পরাজয়ে জনগণের কিছু যায় আসে না। জনগণ চায় সামাজিক ও রাজনৈতিক চুক্তি। যে চুক্তি তাদের ক্ষুধা-দারিদ্র দূর করবে। দেশে শান্তি আনবে।

তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদ ট্যাগ দিয়ে যারা জনগণের গুরুত্বপূর্ণ অংশের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ছক কষছেন; মনে রাখবেন, তারাও ফ্যাসিবাদ ছাড়া ভিন্ন কিছু না। সকল দলের ভোটাধিকার নিশ্চিতে বড় দল হিসাবে বিএনপিকেই এর দায় নিতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কোনো রাজনৈতিক পক্ষকে ভয় পেতেন না। নিরংকুশ ক্ষমতা পেয়েও তিনি ঝুকি নিয়ে ভোট দিলেন, আবার ৭৬.৬ শতাংশ ভোট পেয়েও তিনি সবার জন্য রাজনীতি উম্মুক্ত করেছিলেন। আজ সেই মহানুভবতার ধারা অব্যাহত রেখে ফখরুল ভাই বলেছেন, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন চান। আমরা বিশ্বাস করি অধিকার আদায়ের লড়াই করেছি কারো অধিকার কেড়ে নিতে নয়।

জামায়াতের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, যেই জামায়াত নিজেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, নিজেই আসামি পক্ষের আইনজীবী, সেই জামায়াতের অধিকার নাই এটা বলার যে, অমুক নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তারা নিজেরাই তো বৈধ না এদেশে রাজনীতি করার জন্য। তারা আকারে অঙ্গিতে কৌশলে ক্ষমা চায়। ৭১ এ যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ক্ষমার যোগ্য হয় কি করে। এক জুলাই করে আজ তারা রাজনীতি করবে অন্যদের বাদ দেবে। আর জুলাইয়ে তারা কোথায় কি ছিড়ছে তারও একটা তালিকা দেক। সত্যিকারের বিপ্লবীরা কাউকে ভয় পায় না।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে তারা পাকিস্তানকে ভয় পেয়ে আনুগত্য করেছিল। দেশের মানুষের সাথে দজ্জালের মত আচরণ করেছিল। ২০২৩ এ ২৮ অক্টোবরে আমরা যখন লড়াই করছিলাম, জামায়াত তখন আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্য করে আন্দোলন হতে গা ঢাকা দিয়েছিল। হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাচনে গিয়ে তারা জাতীয় বেইমান হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে লীগের সাথে তাদের দহরম মহরম আমরা জানি। সুতরাং তাদের কথায় এদেশের মানুষ আর নাচবে না। ১৯৭১ জামায়াতের মিছিল মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে বড় ছিল, তাই বলে তারা জিতে নাই। দালালের সংখ্যা বেশিই দেখা যায়, অল্প কজন বিপ্লবীই বিপ্লব ঘটায়।

তিারেক রহমান আরো বলেন, ফ্যাসিবাদ ফ্যাসিবাদ শুনতে জামায়াতের আমিরের ভালো লাগে না। আমি বলি, যুগে যুগে আরো বহু ফ্যাসিবাদ আসবে, যে ক্ষম্মতায় আসবে সেই এই চরিত্র নেবে। বাচ্চা আসিফ মাহমুদ, এলাকার ডজন খানেক বিএনপি নেতাকে আটক করিয়েছেন। তিনি কি ফ্যাসিস্ট নন? ফ্যাসিস্ট কারো গায়ে সিল মারা নাই, ফ্যাসিবাদীবিরোধী আসিফ মাহমুদও এখন ফ্যাসিস্ট লুটপাটকারী। তার পিএস-এপিএসের দূর্নীতি মামলা এখন ডিপ ফ্রিজে। সুতরাং কেউ কারো চেয়ে কম ফ্যাসিস্ট না। ফ্যাসিবাদ ট্যাগিং করে গণতন্ত্রের পথকে সংকীর্ণ করা যাবে না। এ চোরা গলিতে মুক্তি নাই।

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রেসিডেন্ট জিয়া বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন : এ্যানি Dec 16, 2025
img
১৮ কোটিতে পাথিরানাকে দলে নিল কলকাতা Dec 16, 2025
img
জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, ছিল ভারতের বিরুদ্ধে : আমির হামজা Dec 16, 2025
img
দেশে ফিরলেই গ্রেফতার হবেন শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক Dec 16, 2025
আমরা হগল সিলোটি, আমরা টাইটান্স: ভিডিও বার্তায় মঈন আলি Dec 16, 2025
নতুন ভিডিও ভাইরাল, সমালোচনায় পরীমণি Dec 16, 2025
img
মেসির আগমনে বিশৃঙ্খলার জেরে পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রীর পদত্যাগ Dec 16, 2025
img
তৌহিদী জনতার নামে উড়োচিঠি দেশবিরোধীদের চক্রান্ত : ইসলামী আন্দোলন Dec 16, 2025
img
একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে : টুকু Dec 16, 2025
img
১৬ ডিসেম্বরের প্রত্যয় থেকেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : আসিফ নজরুল Dec 16, 2025
img

সাভারে মির্জা আব্বাস

স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনো দেশের শান্তি কামনা করেনি Dec 16, 2025
img
২৫ কোটি ২০ লাখ রুপিতে বিক্রি হলেন ক্যামেরন গ্রিন Dec 16, 2025
img
বিজয় দিবস উদযাপনে গোল্ডেন টিউলিপ দ্য গ্র্যান্ডমার্ক-ঢাকায় ক্ষুদে শিল্পীদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা Dec 16, 2025
img
একাত্তর ও চব্বিশের দালালদের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ : নাহিদ ইসলাম Dec 16, 2025
img
রাজধানীতে এনসিপির আগ্রাসন বিরোধী যাত্রা শুরু Dec 16, 2025
img
ফের আলোচনায় বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি Dec 16, 2025
img
হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সামনে এলো রহস্যজনক তথ্য Dec 16, 2025
img
পর্তুগালে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে গাইবেন 'জলের গানের' রাহুল আনন্দ Dec 16, 2025
img
সরকারি ৪ অধিদপ্তরে নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) নিয়োগ Dec 16, 2025
img

সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে চলছে উন্নত চিকিৎসা

হাদির অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন, চিকিৎসকদের নজর ‘টাইম উইন্ডোতে’ Dec 16, 2025