‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫’ অনুমোদন

‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫’ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নীতিমালাটি দেশের পরিবহণ, সরবরাহ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আধুনিক, দক্ষ ও টেকসই করার লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৭তম বৈঠকে এই নীতি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, একটা নীতিমালা থাকলে সরকার তার কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারে, একটা নির্দেশনা পায়। আজকের নীতিমালাটি লজিস্টিক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক-নির্দেশনা।

তিনি বলেন, এই নীতিমালার ফলে বাংলাদেশের বেসরকারি ও সরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পাবে।

প্রেস সচিব জানান, বর্তমানে দেশের প্রধান নৌবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো কোনো সময় পণ্য রপ্তানিতে ১১ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এই লজিস্টিকস নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারলে পণ্য পরিবহণ ও প্রাপ্যতা অনেক দ্রুত হবে এবং রপ্তানি কার্যক্রম আরও সহজ হবে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালে এ ধরনের একটি নীতি করা হয়েছিল। পরে তা পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা যায়, সেটি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন সচিব এহসানুল হকের নেতৃত্বে একটি কমিটি নতুনভাবে খসড়া প্রণয়ন করে।

নীতিমালার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে লজিস্টিক খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে রেলওয়ে ও নৌপরিবহণ খাতে। দেশের প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার নৌপথ রয়েছে, যার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

তিনি জানান, নীতিমালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মডেলে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে লজিস্টিক খাতকে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে আনা হবে, যেখানে শুল্ক, ফি ও কাগজপত্রসহ সব কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো— আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার পর বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে বর্তমানে যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে, তা ধীরে ধীরে কমে আসবে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের দাম বাড়বে। এই অতিরিক্ত ব্যয় সামাল দেওয়া ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নীতিটি সহায়তা করবে।

আরপি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান Dec 22, 2025
img
রিমান্ডে নেওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু Dec 22, 2025
img
১৬ বছরের দাম্পত্যের ইতি টানলেন অভিনেত্রী শ্রীনন্দা Dec 22, 2025
img
ব্রুনোর চোটের পরে স্বস্তির বার্তা, হতাশা সত্ত্বেও লড়াই অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন আমোরিম Dec 22, 2025
img
ওসমান হাদি হত্যার ঘটনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে : জাবের Dec 22, 2025
img
বিবাহিত হিরো ও হিরোইনের সিনেমায় আবেদন থাকে না : শাকিল খান Dec 22, 2025
img
হাদিকে স্মরণ করে বাংলাদেশ রেবেলসের নতুন দুই গান প্রকাশ Dec 22, 2025
img
আরশের সঙ্গে কাজ করতে চাই : তাসনুভা তিশা Dec 22, 2025
img
যদি তাদের অবস্থান জানতাম, ধরে ফেলতাম : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 22, 2025
img
নিজের জীবনের ডিপ্রেশন থেকেই তারা এই সব মন্তব্য করে: কোয়েল Dec 22, 2025
বরকতময় সকাল পাওয়ার উপায় | ইসলামিক টিপস Dec 22, 2025
img
বাবার বয়সী নির্মাতা, ভাবিনি তিনি জোরপূর্বক এমনটা করবেন: মালতি চাহার Dec 22, 2025
img
নতুন ৩ দফা ঘোষণা ইনকিলাব মঞ্চের Dec 22, 2025
img
ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ Dec 22, 2025
img
বড়োদিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো ধরনের আতশবাজি ফোটানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 22, 2025
img
ক্যারিবীয় অঞ্চলে তেল ট্যাংকার জব্দ করল মার্কিন কোস্টগার্ড Dec 22, 2025
img
মব তৈরি করে প্রতিষ্ঠানে হামলা গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড: রিজভী Dec 22, 2025
img
এনসিপির মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন জুলাই শহীদের বাবা Dec 22, 2025
img
বাইডেন-যুগের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করছে ট্রাম্প প্রশাসন Dec 22, 2025
img
২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর বন্ধ থাকবে জার্মান দূতাবাস Dec 22, 2025