৩ মুসলিম দেশের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত সুদানের যোদ্ধারা

সুদানের গৃহযুদ্ধে দুই বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি তিন মুসলিম দেশ এতে মধ্যস্থতা করেছে।

বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘কোয়াড’ মধ্যস্থতাকারী গোষ্ঠীর প্রস্তাবিত‘যুদ্ধবিরতি’ মেনে নিতে তারা প্রস্তুত। এই গোষ্ঠীতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি রয়েছে সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

আরএসএফ বলেছে, এই যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য যুদ্ধের ভয়াবহ মানবিক পরিণতি মোকাবিলা করা এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা জোরদার করা। তবে সুদানের সরকারি সেনাবাহিনী (এসএএফ) এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও আফ্রিকাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাসাদ বোলুস এর আগে জানান, উভয়পক্ষ নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষের আনুষ্ঠানিক আপত্তি পাইনি।

আল জাজিরার খার্তুম প্রতিনিধি হিবা মর্গানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি তিন মাস স্থায়ী হবে এবং তা পরবর্তী সময়ে একটি রাজনৈতিক সমাধানের পথ প্রশস্ত করতে পারে, যার মধ্যে নতুন বেসামরিক সরকার গঠনের বিষয়টিও রয়েছে।

তিনি জানান, আরএসএফ বলছে তারা এই দুই বছরের সংঘাতের অবসান চায়। তবে সেনাবাহিনী বারবার জানিয়েছে, তারা লড়াই চালিয়ে যেতে চায় এবং আরএসএফ সদস্যদের পুনরায় সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করে।

সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতা চায় না এবং যুদ্ধবিরতির আগে আরএসএফকে দখলকৃত শহরগুলো থেকে সরে যেতে হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, আমরা শত্রুকে পরাজিত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই আমরা নিহত ও নির্যাতিতদের প্রতিশোধ নেব।

অন্যদিকে, আরএসএফের বিরুদ্ধে উত্তর দারফুরের এল-ফাশের শহর দখলের পর ব্যাপক গণহত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ওই অঞ্চল থেকে ইতিমধ্যে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, শহর দখলের সময় একটি শিশু হাসপাতালের অন্তত ৪৬০ রোগী ও চিকিৎসক নিহত হন। বর্তমানে আরএসএফ দারফুর ও দক্ষিণ সুদানের কিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে, আর সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণে রেখেছে দেশটির উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আর নেই বলিউড অভিনেত্রী জেরিন খান Nov 07, 2025
img
গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলতে বিভিন্ন চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল Nov 07, 2025
img
জাপানের জনশক্তির ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ বাংলাদেশের Nov 07, 2025
img
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান Nov 07, 2025
img
জায়েদ খানের অতিথি ঋতুপর্ণা Nov 07, 2025
img
তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী নামালো চীন Nov 07, 2025
img
নয়াপল্টনে চলছে বিএনপির সমাবেশ Nov 07, 2025
img
আফগানিস্তানকে স্তব্ধ করল নেপালের রশিদ খানের হ্যাটট্রিক! Nov 07, 2025
img
সেনাপ্রধানকে নিয়ে অপপ্রচার, দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ Nov 07, 2025
img
নীলফামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল এক ইপিজেড শ্রমিকের Nov 07, 2025
img
খুলনার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী ফয়েজ মাহমুদ গ্রেপ্তার Nov 07, 2025
img
রাজস্থানেই বিয়ে করবেন বিজয়-রাশমিকা Nov 07, 2025
img
বাগেরহাটে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের Nov 07, 2025
img
কাছের মানুষ হারালেন হৃতিকের প্রাক্তন স্ত্রী Nov 07, 2025
img
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জায়গা হয়নি উইলিয়ামসনের Nov 07, 2025
img
জামায়াত এখন জিয়াউর রহমানের বিএনপির মতোই জনপ্রিয় : তাহের Nov 07, 2025
img
ওমরাহ পালন করতে সৌদি গেলেন সারজিস আলম Nov 07, 2025
img
উত্তম কুমারের নায়িকা সুলক্ষণা আর নেই Nov 07, 2025
img
উন্নত চিকিৎসার জন্য এরশাদ উল্লাহকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে Nov 07, 2025
img
মা হওয়া জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয় Nov 07, 2025