গবেষণা ও পরিকল্পনাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স হলে বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সব শ্রেণির মানুষের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যস্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করা। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) যেসব এলাকা কৃষিজমি ও জলাধার হিসেবে নির্ধারিত ছিল, আজ তার অনেকটুকু দখল-দূষণে হারিয়ে গেছে, যা পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার ভেতরে আমরা কত মানুষকে আবাসনের সুযোগ দিতে পারব এবং কীভাবে নতুন জনসংখ্যার অতিরিক্ত চাপ ঢাকায় আসা রোধ করা যায়, সে বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রমাণভিত্তিক পরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি। এই গবেষণা ও পরিকল্পনাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য সচিব ড. মঞ্জুর হোসেন বলেন, এসডিজি ১১-এর সঙ্গে এসডিজি ১৬ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গত দুই দশকে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেগুলোকে যথাযথভাবে উন্নয়ন করা হয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী না হলে কোনোভাবেই এসডিজির লক্ষ্যসমূহে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব নয়।
নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহমুদ আলী বলেন, নগর এলাকার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বস্তিতে বসবাস করছে, যেখানে নিরাপদ আবাসন, স্বাস্থ্য বাবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এসডিজি ১১ অর্জনের জন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নিতে হবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও চাপের মধ্যেও পরিকল্পিত ঢাকা মহানগরী গড়তে রাজউক কাজ করে যাচ্ছে।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফেরদৌসী বেগম বলেন, আগামী প্রজন্মকে একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য শহর উপহার দিতে হলে শহর পরিকল্পনা অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে সকল পেশাজীবী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান মিলে কাজ করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান, বলেন, আবাসন উন্নয়ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী চলাচল, নিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বায়ু মান উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা ও অংশগ্রহণমূলক বাস্তবায়নের মাধ্যমে সীমিত সম্পদকেও দৃশ্যমান উন্নয়নে রূপান্তর করা সম্ভব।
কেএন/টিএ