ত্বকের যত্নে ভিটামিন-সি

ত্বকের সুরক্ষা সম্পর্কে যদি সচেতন থাকেন, তবে নিশ্চয়ই ভিটামিন-সি সম্পর্কে শুনেছেন। যা বাজারে উপস্থিত সেরা অ্যান্টি-এজিং উপাদানগুলির একটি হিসাবে বিবেচিত। এটি ত্বককে মসৃণ ও ত্রুটিমুক্ত করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

অন্য কোনো উপাদানই এই দিক থেকে ভিটামিন-সি এর চেয়ে বেশি কার্যকারিতার দাবিদার নয়। বর্তমানে ত্বকের পরিচর্যার প্রায় সব ধরণের প্রসাধনীতেই এর ব্যবহার দেখা যায়। ক্লিনজার, সেরাম, ময়শ্চারাইজার, ফেস-মাস্ক প্রভৃতি প্রসাধনীতে ভিটামিন-সি এর ব্যবহার সর্বজন নিবেদিত।

উপাদান হিসাবে ভিটামিন-সি এর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে এটি আপনার ত্বককে নিরাপদ করে। ভিটামিন-সি প্রাকৃতিকভাবে বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া ধীর করে এবং আপনার দেহের ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের কোষগুলিকে মেরামত করতে সহায়তা করে।

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার সমূহ যেমন ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকর, ঠিক একইভাবে ভিটামিন-সি অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি এবং বায়ু দূষণ সম্পর্কিত ক্ষতি থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে।

আসুন জেনে নিই, ত্বকের যত্নে ভিটামিন-সি কীভাবে কাজ করে-

কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়
কোলাজেন উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ভিটামিন-সি সুপরিচিত। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি প্রোটিন কোলাজেন। যা আমাদের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পায়। দেহে কোলাজেনের পরিমাণ কমে গেলে ত্বকে সূক্ষ্ম রেখা এবং বলি রেখা দেখা দিতে পারে।

সূর্যের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে
আমাদের ত্বক সূর্যের আলোতে থাকা ফ্রি র‌্যাডিক্যাল নামক অণু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভিটামিন-সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলিকে একটি ইলেক্ট্রন সরবরাহ করার মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার মধ্য দিয়ে ত্বককে সুরক্ষা দান করে।

হাইপারপিগমেন্টেশনকে বিবর্ণ করতে সহায়তা করে
হাইপারপিগমেন্টেশন অর্থাৎ সানস্পটস, বয়সের দাগ, মেলাসমা প্রভৃতি যখন দেখা দেয়, তখন ত্বকের কিছু অঞ্চলে অতিরিক্ত মেলানিন উৎপাদিত হয়। ভিটামিন-সি মেলানিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দাগযুক্ত (হাইপারপিগমেন্টেশন) স্থানে ভিটামিন-সি প্রয়োগ করলে দাগ ধীরে ধীরে লোপ পায়।

চোখের নীচের কালো দাগ দূর করে
ভিটামিন-সি যুক্ত সিরাম চোখের নীচের অংশটি প্লাম্পিং ও আদ্র করার মধ্য দিয়ে সূক্ষ্ম রেখাগুলি মসৃণ করে তোলে। চোখের নিচের সামগ্রিক লালচে ভাব কমাতে ভিটামিন-সি আরও কার্যকর। দাবি করা হয় যে, এটি চোখের নীচের কালো দাগের ফলে সৃষ্ট বিবর্ণতা হ্রাস করতে পারে।

ত্বকের যত্নে কীভাবে ভিটামিন-সি ব্যবহার করতে পারেন?
ত্বকের পরিচর্যার জন্য আপনি খুব সহজেই বাজার থেকে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ প্রসাধনী সংগ্রহ করতে পারেন। সেজন্য প্যাকেটের গায়ে পণ্যটিতে ‘এসকরবিক অ্যাসিড’ (এটি এল-অ্যাসকরবিক অ্যাসিড নামেও পরিচিত) ব্যবহার করা হয়েছে কিনা দেখে নিন। এটি ত্বকের যত্নে ভিটামিন-সি এর সবচেয়ে স্থিতিশীল ও কার্যকর রূপ।

সব থেকে কার্যকর উপায় হলো ভিটামিন-সি সিরাম ব্যবহার করা। কারণ, এটি ক্রিম বা টোনারের চেয়ে বেশি কার্যকর। ভিটামিন-ই এর মতো অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষতির বিরুদ্ধে দ্বিগুণ সুরক্ষা দিতে পারে।

ভিটামিন-সি কখন ব্যবহার করা উচিৎ নয়?
সংবেদনশীল ত্বক থাকলে ভিটামিন-সি এর কারণে অ্যালার্জি বা লালচে দাগ সৃষ্টি হতে পারে। এটি এড়াতে কম ঘনত্বের সিরাম ব্যবহার করুন। ব্যবহারের পূর্বে ভিটামিন-সি ব্যবহারে আপনার অ্যালার্জি হয় কি না তা অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: