পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের চালানো অপারেশন সিন্দুর থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ।
একইসঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক ভালো না হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে কাশ্মিরে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগও তুলেছে বিজেপি। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
জম্মু-কাশ্মির ন্যাশনাল কনফারেন্সের (জেকেএনসি) প্রধান এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর বাবা ফারুক আবদুল্লাহ এদিন হরিয়ানায় আটক হওয়া সন্ত্রাসীদের নিয়েও কথা বলেন। ওই সন্ত্রাসীরা পেশায় সবাই ডাক্তার। তিনি বলেন, কেন সেই ডাক্তাররা এমন পথে গেলেন, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
ফারুক আবদুল্লাহর ভাষায়, “যারা দায়ী, তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে— কেন এসব ডাক্তারকে এই পথে যেতে হলো? কী কারণ? এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও বিশদ বিশ্লেষণ হওয়া দরকার।”
ফারুক আশঙ্কা প্রকাশ করেন, হরিয়ানায় সন্ত্রাসী চক্র ভেঙে দেওয়ার ঘটনার পর নতুন করে আরেকটি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, “আমি আশা করি তেমন কিছু হবে না। অপারেশন সিন্দুর থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। আমাদের ১৮ জন মানুষ মারা গিয়েছিল, সীমান্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। দুই দেশের সম্পর্ক ভালো না হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আমি আবারও বাজপেয়ীর সেই কথাই বলব বন্ধু বদলানো যায়, কিন্তু প্রতিবেশী বদলানো যায় না।”
এছাড়া গত শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের একটি থানায় বিস্ফোরণে ৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনাতেও প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেন ফারুক আবদুল্লাহ। বিস্ফোরক সামগ্রী ঠিকমতো না সামলানোর ফলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “এটা আমাদের ভুল। যারা বিস্ফোরক সম্পর্কে ভালো জানে, নিজেরা সামলানোর বদলে তাদের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। ফল তো দেখলেন ৯ জন মারা গেল, আশপাশের বাড়িঘর নষ্ট হলো। অথচ দিল্লির ঘটনাতেই কাশ্মিরিদের দোষারোপ করা হচ্ছে। কবে সেই দিন আসবে, যখন আমাদের ভারতীয় হিসেবে গ্রহণ করবে? কবে আর এমন অভিযোগ উঠবে না?”
জবাবে বিজেপি নেতা তরুণ চুঘ সরাসরি ফারুক আবদুল্লাহকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের জন্য চোখের পানি ফেলাই ওদের পুরোনো অভ্যাস। ফারুক আবদুল্লাহ এখনই সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেওয়া বন্ধ করুন।”
শ্রীনগরের নওগাম থানায় বিস্ফোরণের বিষয়ে জম্মু-কাশ্মির পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত বলেন, ফরেনসিক নিয়ম মেনে বিস্ফোরক পরীক্ষা চলার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাই অযথা জল্পনা-কল্পনার দরকার নেই।
এবি/টিকে