ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে। বুধবার (১৯শে নভেম্বর, ২০২২) নির্বাচন ভবনে দুই পর্বে মোট ১২টি দলের সঙ্গে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ সাতটি দল এবং বিকেলে বিএনপিসহ পাঁচটি দল সংলাপে অংশ নেয়। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসির প্রতি নিরপেক্ষ থেকে শক্ত ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানালেও, কোনো কোনো দল ইসির কার্যকর ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।
ইসির সাথে সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো দিয়েছে নানা ধরণের প্রস্তাব। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। ইসি থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা করার প্রস্তাব বিএনপির।
২। লটারির মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনে রদবদল চায় জামায়াত।
৩। জোটবদ্ধ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের ব্যবহার নিয়ে দলগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে মত।
৪। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দলগুলোর সহায়তা চায় ইসি।
এছাড়া, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শগুলোর মধ্যে ছিল, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অন্তত পাঁচজন করে সেনাসদস্য মোতায়েন, আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না দেওয়া, নির্বাচনী প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ছড়ানো রোধে ব্যবস্থা নেওয়া, নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা, নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া, নির্বাচনী আইনবিধি সংস্কারে দলগুলোর সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করা এবং ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা। জোটবদ্ধ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের ব্যবহার সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে মত এসেছে।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ও ইসি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে ওয়াদাবদ্ধ এবং ইসি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি দলগুলোর প্রতি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান। সিইসি আরও উল্লেখ করেন, দেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা মেনে নিয়েই ইসিকে এগোতে হবে এবং দলগুলোর পরামর্শ বিবেচনায় রাখা হবে। গণভোটের আইন হওয়ার পর এ বিষয়ে কাজ শুরু করার কথাও জানান তিনি।
সংলাপে নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। ইসি সচিব আখতার আহমেদ সংলাপ সঞ্চালনা করেন।
ইএ/এসএন