ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) সম্প্রতি অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার ও অনিয়ন্ত্রিত বিক্রয় বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এই লক্ষ্যে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যেখানে ফার্মেসির মালিক, ফার্মাসিস্ট এবং সাধারণ জনগণ—সবার জন্য বিস্তারিত ও বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশনার মূল লক্ষ্য হলো, রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বা বিতরণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা।
ফার্মেসি ও বিক্রেতাদের জন্য কঠোর নির্দেশাবলী
‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩’-এর ৪০(ঘ) ধারা অনুসারে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে:
প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ: শুধুমাত্র ওভার দ্য কাউন্টার (OTC) ওষুধ ছাড়া, রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক বা প্রেসক্রিপশনভুক্ত অন্য ওষুধ বিক্রয় বা বিতরণ করা যাবে না।
ক্রয়-বিক্রয়ের রেকর্ড সংরক্ষণ: অ্যান্টিবায়োটিক-জাতীয় ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্যাদি অবশ্যই একটি রেজিস্টারে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ক্যাশমেমো বাধ্যতামূলক: অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির সময় স্বাক্ষর ও তারিখসহ স্পষ্ট ক্যাশমেমো প্রদান করতে হবে।
পূর্ণ কোর্স সেবনের পরামর্শ: ফার্মাসিস্টদের অবশ্যই রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সম্পূর্ণ কোর্স অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের বিষয়ে পরামর্শ দিতে হবে।
সংরক্ষণ ও মোড়ক: সব ওষুধ নির্ধারিত তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে এবং রেড লেবেল সংবলিত মোড়ক ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বেচাকেনা করা যাবে না।
আইনানুগ ব্যবস্থা: নির্দেশনা অমান্য করলে বা রেজিস্টার সংরক্ষণ না করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাধারণ জনগণের জন্য সচেতনতামূলক পরামর্শ
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের (Antimicrobial Resistance - AMR) মতো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে জনসাধারণের প্রতিও নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলো জারি করা হয়েছে:
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ক্রয় নয়: রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক কেনা, সেবন বা ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
সম্পূর্ণ কোর্স সেবন: সুস্থতা অনুভব করলেও চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ কোর্স অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন। কোর্স অসম্পূর্ণ রাখলে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে, যা জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
মেয়াদ ও ক্যাশমেমো: ওষুধ কেনার সময় অবশ্যই মেয়াদ দেখে নিন এবং বিক্রেতার স্পষ্ট স্বাক্ষর ও তারিখসহ ক্যাশমেমো সংগ্রহ করুন।
নষ্ট ওষুধ ফেরত দিন: মেয়াদোত্তীর্ণ বা নষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক মাটি, পানি বা আবর্জনার সঙ্গে না ফেলে নিকটস্থ ফার্মেসিতে ফেরত দিন।
এই কঠোর পদক্ষেপ অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধ করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমকে/টিএ