দীর্ঘ ছয় দশকের বর্ণিল ক্যারিয়ার শেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ধর্মেন্দ্র। যার পুরো নাম ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষ্ণন দেওল। অথচ তার শুরুটা ছিল চরম অনিশ্চয়তার। প্রথম সিনেমায় পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন মাত্র ৫১ টাকা! লুধিয়ানার সাহনেওয়ালের সাধারণ এক স্কুল শিক্ষকের সন্তান থেকে ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি হয়ে ওঠার সেই গল্প হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও।
ধর্মেন্দ্রর বাবা ছিলেন পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিনি চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হোক। কিন্তু ছেলের মন পড়ে থাকত স্বপ্নের নায়ক দিলীপ কুমারের দিকে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দিলীপ কুমার ভাবতেন, স্বপ্ন দেখতেন বড় পর্দার তারকা হওয়ার। বাবার ঘোর আপত্তি থাকলেও ছেলের স্বপ্নের সারথি হয়েছিলেন মা। মূলত মায়ের প্রশ্রয়েই ফিল্মফেয়ার ট্যালেন্ট হান্টে অংশ নেন ধর্মেন্দ্র এবং বিজয়ীর মুকুটও ছিনিয়ে আনেন।
এরপর মায়ের অনুমতি নিয়েই পাড়ি জমান স্বপ্নের শহর মুম্বাইয়ে। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা, হম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। এক রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চে নিজের প্রথম আয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন এক বিস্ময়কর তথ্য।
তার কথায়, ‘সেই ছবির শুটিংয়ে তিনজন প্রযোজক ছিলেন। তিনটি আলাদা কেবিনে বসতেন তারা। আমাকে মাঝখানের কেবিনে বসানো হতো। অদ্ভুত বিষয় হলো, তিনজন প্রযোজক আলাদাভাবে এসে আমার পকেটে ১৭ টাকা করে গুঁজে দিয়েছিলেন।’ অর্থাৎ প্রথম ছবির নায়ক হিসেবে তার মোট পারিশ্রমিক দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৫১ টাকা।
সেদিনের সেই ৫১ টাকা পাওয়া তরুণই পরবর্তীকালে নিজের দক্ষতায় গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য। একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে হয়ে উঠেছেন বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী অভিনেতা। শুধু নিজেই নন, তার পুরো পরিবারই আজ বলিউডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুই ছেলে সানি দেওল ও ববি দেওল দাপুটে অভিনেতা।
স্ত্রী ‘ড্রিম গার্ল’ খ্যাত হেমা মালিনী এবং বড় মেয়ে এষা দেওলও অভিনয়ে নিজেদের ছাপ রেখেছেন। বাবার অসম্মতি সত্ত্বেও মায়ের দেওয়া সাহসটুকু সম্বল করেই ধর্মেন্দ্র বলিউডের ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করেছেন।
এসএন