বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান সংস্কার কার্যক্রমের কারণে ব্যাংকিং খাতে গোপন খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, আগে যে অসংখ্য ঋণ নিয়মিত হিসেবে দেখানো হতো বা গোপন রাখা হয়েছিল, সংস্কারের ফলে সেগুলো এখন প্রকাশ পাচ্ছে। এ কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হঠাৎ বেশি দেখাচ্ছে। গতকাল বুধবার তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে যেসব ঋণ আগে খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়নি, সেগুলো এখন পরিষ্কারভাবে দেখানো হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু এটি নতুন ঋণ বিতরণ ও খেলাপির কারণে নয় বরং আগের গোপন ঋণ শ্রেণিকরণের কারণেই।’ তিনি জানান, ব্যাংকিং খাতের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা শক্তিশালী করা, দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের উদ্যোগ, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন, ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ ও বিক্রির উদ্যোগ ও পুঁজিবাজারে শেয়ার জব্দকরণসহ কঠোর নজরদারি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বহু গ্রাহকের সম্পদ জব্দ করা হচ্ছে, শেয়ার আটকানো হচ্ছে। এসব উদ্যোগ আরও জোরদার করতে হবে। সংস্কার বাস্তবায়নে সফল হলে ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার হবে এবং ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণও কমে আসবে। ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া এক অর্থে দেশের ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার ইতিবাচক প্রমাণ।
তার ভাষায়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সবকিছু স্পষ্ট করছে, প্রকৃত চিত্র সামনে আনছে, এটাই খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির মূল কারণ।’
এমকে/এসএন