রেসলিং মানেই উত্তেজনা, আর জন সিনা মানেই গর্জন। কিন্তু এবার সেই গর্জনের জায়গায় নেমে এসেছে নীরবতা আর আবেগ। ডব্লিউডব্লিউই ভক্তদের হৃদয়ে ঝড় তোলা জন সিনা রবিবার সকালে নামছেন নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে। আর তার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক আবেগঘন বার্তায় ভক্তদের মন আরও ভারাক্রান্ত করে তুলেছেন এই কিংবদন্তি।
জন সিনা লিখেছেন, আমি আর প্যাট ম্যাকাফি শোতে বহুবার বলেছি-কেউ একা কিছু করতে পারে না। ডব্লিউডব্লিউই-এর আমার সহযোদ্ধা সুপারস্টাররা, স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকা প্রতিটি ভক্ত, টিভির পর্দায় যারা আমাকে দেখেছেন, আর ক্যামেরার পেছনের বিশাল পরিবার-সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
জন সিনার বিদায়ী ম্যাচটি হচ্ছে ‘দ্য লাস্ট টাইম ইজ নাউ’ নামের বিশেষ টুর্নামেন্টের ফাইনাল লড়াই। ১৬ জন তারকা রেসলার অংশ নিয়েছিলেন এই টুর্নামেন্টে, যেখানে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে সিনার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন সাবেক বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন গুন্থার। রবিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে এই ঐতিহাসিক ম্যাচ।
২০০২ সালে অভিষেকের পর থেকে সিনা কেটেছেন ৮,৫৭০ দিন। এই সময়ে তিনি জিতেছেন ১৭টি বিশ্ব শিরোপা, উপহার দিয়েছেন বিশ্বখ্যাত ‘ইউ ক্যান্ট সি মি’ ক্যাচফ্রেজ, এবং হয়ে উঠেছেন ডব্লিউডব্লিউই–এর সবচেয়ে বড় তারকাদের একজন।
‘রুথলেস অ্যাগ্রেশন’ যুগের রুকি থেকে ‘ডক্টর অব থুগানমিক্স’, এরপর ‘নেভার গিভ আপ’ আদর্শে বিশ্বাসী নায়ক- জন সিনার রিং চরিত্রের বিবর্তনও ছিল চোখে পড়ার মতো।
শুধু রেসলার হিসেবেই নয়, মানুষ হিসেবেও জন সিনা অনন্য। তিনি মেইক আ উইশ ফাউন্ডেশন–এর মাধ্যমে ৬৫০টিরও বেশি শিশুর ইচ্ছা পূরণ করে গড়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। নিজে ত্বকের ক্যানসারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে হয়েছেন সানস্ক্রিন ব্র্যান্ডের মুখ, লিখেছেন শিশুদের বই, অভিনয় করেছেন হলিউড ছবিতে-সব মিলিয়ে এক ‘অথেনটিক’ ব্র্যান্ড।
গত বছরই জন সিনা ঘোষণা দেন, ২০২৫ সালই হবে তার শেষ প্রতিযোগিতামূলক বছর। একাধিক অস্ত্রোপচার, দীর্ঘদিনের ইনজুরি আর শারীরিক ক্লান্তি-সব মিলিয়ে তার শরীরই যেন তাকে থামতে বলেছে।
তিনি নিজেই বলেছেন, আমার শরীর ব্যথায় চিৎকার করছে- এই অধ্যায় শেষ করার সময় হয়েছে।
যদিও রিংয়ে আর দেখা যাবে না, তবুও ডব্লিউডব্লিউই-এর সঙ্গে পাঁচ বছরের অ্যাম্বাসাডর চুক্তি করেছেন জন সিনা। অর্থাৎ, কোনো না কোনোভাবে তিনি থাকবেনই।
সূত্র: বিবিসি, সেস্কুপ্স
আইকে/টিএ