জানা গেল তাসনিম জারার পদত্যাগ করার কারণ!

এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।

আজ শনিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগ করে তিনি এনসিপির একটি অনলাইন গ্রুপে লিখেছেন, ‘প্রিয় সহযোদ্ধাগণ, আমি দল থেকে পদত্যাগ করেছি। গত দেড় বছরে আপনাদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

সে জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল।’

এদিকে আজ শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে একটি পোস্ট দিয়ে তিনি। ওই পোস্টে জারা বলেন, ‘প্রিয় খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদাবাসী, আমি আপনাদের ঘরের মেয়ে।

খিলগাঁওয়েই আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আমার স্বপ্ন ছিল একটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম থেকে সংসদে গিয়ে আমার এলাকার মানুষের ও দেশের সেবা করা। তবে বাস্তবিক প্রেক্ষাপটের কারণে আমি কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আপনাদের এবং দেশের মানুষকে ওয়াদা করেছিলাম যে আপনাদের জন্য ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ার জন্য আমি লড়ব।

পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, আমি আমার সেই ওয়াদা রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঢাকা-৯ থেকে অংশগ্রহণ করব।’

তিনি বলেন, ‘একটা দলের প্রার্থী হলে সেই দলের স্থানীয় অফিস থাকে, সুসংগঠিত কর্মী বাহিনী থাকে। সরকার ও প্রশাসনের সাথে নিরাপত্তা বা অন্যান্য বিষয়ে আপত্তি ও শঙ্কা নিয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে। তবে আমি যেহেতু কোনো দলের সাথে থাকছি না, তাই আমার সে সব কিছুই থাকবে না।

এদিকে তাসনিম জারার এনসিপি ছাড়ার পেছনে কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে নানাজনের নানা মত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুট করেই এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের ছয় নেত্রীকে ফেসবুকে একটি ছবি আপলোড করদে দেখা যায়। জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনার মধ্যে যে ছবি জন্ম দেয় আগ্রহের।

জানা গেছে, গতকাল দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বাসায় এক বৈঠকে অংশ নেন এই ছয় নেত্রী। বৈঠকে তারা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া জামায়াত-এনসিপির আসন সমঝোতা নিয়ে ভেটো দেন। তুলে ধরেন নিজেদের মতবিরোধের কথা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, নারী নেত্রীদের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিষয়ে সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। বৈঠকে তারা জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে একযোগে এনসিপি থেকে পদত্যাগের হুমকি দেন। এই নেত্রীরা বিএনপির সঙ্গে জোট বা এককভাবে নির্বাচনের জন্য চাপ দেন নাহিদকে।

এ সময় তাদের জানানো হয়, বিএনপির পক্ষ থেকে এনসিপিকে আসন দেওয়ার কথা হলেও তা তারা ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছাড় দেবে, দল হিসেবে এনসিপিকে নয়। এমন প্রেক্ষাপটে ও মাঠের পরিস্থিতি বিবেচনায় দলীয় নির্বাহী পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিষয়টি ফের ব্যক্ত করা হয়। তবে উপস্থিত এই নেত্রীরা কোনোভাবেই জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি মানতে চাননি।

জানা গেছে, জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার প্রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য দলের ভেতর থেকে নেতাদের একাংশ সরাসরি আহ্বায়ক নাহিদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন এবং তারা পদত্যাগের হুমকিকে আলোচনার জন্য ব্যবহার করছেন। শুধু এই ছয় নেত্রী নন, এনসিপির একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে সম্ভাব্য জোট নিয়ে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছেন এবং তারা কোনোভাবেই চান না এই জোট হোক। তবে বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ও নির্বাচনী কৌশল হিসেবে জামায়াতের সঙ্গে এই জোট অনেকটাই নিশ্চিত।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে শান্তর প্রতিক্রিয়া Dec 27, 2025
img
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকর Dec 27, 2025
img
‘বারাণসী’ হতে পারে রাজামৌলির শেষ সিনেমা! Dec 27, 2025
img
মিরপুরে সাধারণ কবরস্থানের নিরাপত্তায় ৮১২ এলইডি লাইট স্থাপন ডিএনসিসির Dec 27, 2025
img
জামায়াতের সমাবেশের সূচি বদলের আহ্বান ডাকসুর Dec 27, 2025
img
মাকে দেখতে এভারকেয়ারে তারেক রহমান Dec 27, 2025
img
ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 27, 2025
img
রানার হ্যাটট্রিকের পরও সিলেটের কাছে হারল নোয়াখালী Dec 27, 2025
img
জাবিতে শহীদ ওসমান হাদির স্মরণে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত Dec 27, 2025
img
পবন কল্যাণের ‘ওজি’ টলিউডের শীর্ষে Dec 27, 2025
img
হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় রাতেও শাহবাগে মানুষের ঢল Dec 27, 2025
img
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ Dec 27, 2025
img
পরচুলা পরতে আপত্তি টাকা নিয়ে চম্পট অক্ষয় খান্না! Dec 27, 2025
img
বক্সিং ডে টেস্টে ৮২ কোটি টাকার ক্ষতি অস্ট্রেলিয়ার! Dec 27, 2025
img
শুক্রবার দিনটা সারা জীবনের জন্য আমার হৃদয়ে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে: তারেক রহমান Dec 27, 2025
img
গুয়াতেমালায় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে প্রাণ গেল অন্তত ১৫ জনের Dec 27, 2025
img
যোগ্য প্রার্থীদের ডাকলেন নেতা, দেবেন নির্বাচনের খরচও Dec 27, 2025
img
চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন Dec 27, 2025
img
প্রয়োজনে সাব্বির কোন পজিশনে ব্যাট করবেন? Dec 27, 2025
img
তাইওয়ানে আঘাত হানল ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প Dec 27, 2025