ঢাকায় জনঘনত্ব আরও বাড়ানো আত্মঘাতী পদক্ষেপ : ড. আদিল

ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল নগরীতে পরিণত হওয়া ঢাকায় জনঘনত্ব আরও বাড়ানো একটি ‘আত্মঘাতী পদক্ষেপ’। এমন পদক্ষেপ শহরের কার্যকারিতা ও মানুষের জীবনমানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ঢাকা মহানগরীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) এর সংশোধন এবং ইমারত বিধিমালা অনুমোদন: ঢাকার ক্রমবর্ধমান বাসযোগ্যতার সংকট’ শীর্ষক এই সেমিনারে নগরের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ও ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা-২০২৫-এর সাম্প্রতিক সংশোধন রাজধানীর বাসযোগ্যতা, জননিরাপত্তা ও টেকসই নগর উন্নয়নের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মাত্র তিন বছরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের চাপে দুইবার নগর পরিকল্পনা সংশোধন করা হয়েছে, যা মৌলিক নীতি ও আন্তর্জাতিক চর্চার পরিপন্থী। এটি স্পষ্টতই গোষ্ঠীস্বার্থনির্ভর। সংশোধিত ড্যাপে অধিকাংশ এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), ভবনের উচ্চতা, আবাসন ইউনিট ও জনঘনত্ব অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এর পেছনে কোনো গ্রহণযোগ্য কারিগরি বিশ্লেষণ, অবকাঠামোগত সক্ষমতা মূল্যায়ন বা ঝুঁকির বিবেচনা ছিল না।

এই পরিকল্পনাবিদ আরও বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে শহরে যানজট, জলাবদ্ধতা, অগ্নিকাণ্ড ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়বে। একই সঙ্গে পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পয়ঃনিষ্কাশনসহ নাগরিক সেবাব্যবস্থার ওপর অসহনীয় চাপ সৃষ্টি হবে।

সেমিনারে ড. আদিল গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডির মতো এলাকায় ‘ফার’ কমানোর যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে বৈষম্য বজায় রাখার সমালোচনা করেন। আবাসিক এলাকায় ভবনের সর্বোচ্চ উচ্চতা নির্ধারণ না করাকে একটি বড় পরিকল্পনাগত ত্রুটি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ঢাকার টেকসই ভবিষ্যৎ রক্ষায় ড্যাপ সংশোধন অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা, স্বচ্ছ ও কারিগরিভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

বিআইপির সহসভাপতি-১ পরিকল্পনাবিদ শাহরিয়ার আমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে দেশের বিশিষ্ট পরিকল্পনাবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে শান্তর প্রতিক্রিয়া Dec 27, 2025
img
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকর Dec 27, 2025
img
‘বারাণসী’ হতে পারে রাজামৌলির শেষ সিনেমা! Dec 27, 2025
img
মিরপুরে সাধারণ কবরস্থানের নিরাপত্তায় ৮১২ এলইডি লাইট স্থাপন ডিএনসিসির Dec 27, 2025
img
জামায়াতের সমাবেশের সূচি বদলের আহ্বান ডাকসুর Dec 27, 2025
img
মাকে দেখতে এভারকেয়ারে তারেক রহমান Dec 27, 2025
img
ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 27, 2025
img
রানার হ্যাটট্রিকের পরও সিলেটের কাছে হারল নোয়াখালী Dec 27, 2025
img
জাবিতে শহীদ ওসমান হাদির স্মরণে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত Dec 27, 2025
img
পবন কল্যাণের ‘ওজি’ টলিউডের শীর্ষে Dec 27, 2025
img
হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় রাতেও শাহবাগে মানুষের ঢল Dec 27, 2025
img
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ Dec 27, 2025
img
পরচুলা পরতে আপত্তি টাকা নিয়ে চম্পট অক্ষয় খান্না! Dec 27, 2025
img
বক্সিং ডে টেস্টে ৮২ কোটি টাকার ক্ষতি অস্ট্রেলিয়ার! Dec 27, 2025
img
শুক্রবার দিনটা সারা জীবনের জন্য আমার হৃদয়ে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে: তারেক রহমান Dec 27, 2025
img
গুয়াতেমালায় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে প্রাণ গেল অন্তত ১৫ জনের Dec 27, 2025
img
যোগ্য প্রার্থীদের ডাকলেন নেতা, দেবেন নির্বাচনের খরচও Dec 27, 2025
img
চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন Dec 27, 2025
img
প্রয়োজনে সাব্বির কোন পজিশনে ব্যাট করবেন? Dec 27, 2025
img
তাইওয়ানে আঘাত হানল ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প Dec 27, 2025