পুকুরে কোরাল মাছের চাষ

কোরাল বা ভেটকি মাছ। ছোট কিংবা বড় আকৃতির- যেমনই হোক না কেন, স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। ঝোল হোক কিংবা বারবিকিউ বা ভাজা, ফিশ সালাদ বা কাটলেট- ভেটকির স্বাদ জিবে লেগেই থাকে। তাই বোধ হয় এই মাছের কদর বেড়েই চলেছে রসনাবিলাসীদের কাছে। চ্যাপ্টা-লম্বা আকৃতির মাছটির দাম আকাশছোঁয়া।

মজাদার এই মাছ পাওয়া যায় কেবল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার সাগরসংলগ্ন নদ-নদীর মতো জলাশয়গুলোতে। তবে এই মাছ এখন মিঠে পানিতেও চাষ সম্ভব হয়েছে। এমনকি পাঁচ-দশ কাঠা আয়তনের ছোট ছোট পুকুরে ভেটকি মাছ লালন-পালন করা যায়।

যে কোনো পানিতে কোরাল মাছ চাষ করা যাবে। এ মাছ সহজে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। বেশি ঘনত্বেও চাষ করা যায়। এ মাছের প্রজনন ক্ষমতা বেশি, এরা বছরে ৪০ থেকে ৭০ লাখ ডিম দেয়। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস এদের মূল প্রজননকাল। এ সময় এক সেন্টিমিটার আকারের অনেক পোনা ধরা পড়ে।

একজন খামারি যে ধরনের পানিতে কোরাল মাছ চাষ করতে চাইবেন, সেই পানিতে এর চাষ করা যাবে। তবে এর আগে সেই পরিবেশ অনুযায়ী কোরাল মাছকে উপযোগী করে তুলতে হবে। এজন্য লোনাপানি থেকে আনার পর একই মাত্রার পানিতে রাখতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে মিঠা পানি ছেড়ে জলাধারের লবণাক্ততা দূর করতে হবে। একইভাবে কোনো খামারি যদি অতি লবণাক্ত পানিতে চাষ করতে চান, তাহলে তাকে একই ধরনের পদ্ধতি অনুযায়ী কোরালের আবাসস্থল গড়ে তুলতে হবে।

পুকুরে কোরাল মাছ দু'ভাবে চাষ করা যায়। এর মধ্যে একটি একক চাষ পদ্ধতি, অপরটি মিশ্র চাষ পদ্ধতি। প্রথম ক্ষেত্রে চাষ সম্পূর্ণভাবে সম্পূরক খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকে এবং সম্পূরক খাদ্য তাজা মাছের মূল্য বেশি হওয়ায় মুনাফা অনেক কম হওয়ার আশংকা এক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়। তবে মিশ্র চাষ পদ্ধতিতে কোরাল মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়, এমন দ্রুত বর্ধনশীল ও প্রজননক্ষম মাছ চাষ করে সফলতা অর্জন করা যায়। কোরালের সঙ্গে খাদ্যের প্রতিযোগিতা করে এমন মাছ হলে চলবে না। তবে তেলাপিয়া ও নাইলোটিকা মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে নির্বাচিত করা যেতে পারে।

সাধারণত কোরাল মাছ ক্যালিগাস ও লার্ন্যানথোপাস প্রজাতির পরজীবী দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়। পরজীবী আক্রমণ মাছ খাদ্য খায় না, চলাফেরা করতে চায় না এবং আলাদা সাঁতার কাটে। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রাজিকুইন্টাল ও বিটাগ্লুকান সমৃদ্ধ এসজি কুইক ক্লিন প্রতি কেজি খাবারের সঙ্গে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে। তাছাড়াও অন্যান্য যে কোনো রোগে আক্রান্ত হলে অভিজ্ঞ মৎস্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

বাংলাদেশ রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে চীনের দেওয়া ২০টি ইঞ্জিন Sep 15, 2025
img
পুলিশকে অতীতের নির্বাচনী কালিমা থেকে বের হতে হবে : ডিএমপি কমিশনার Sep 15, 2025
img

রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড

১৩ দিনে প্রবাসী আয় ১৩০ কোটি ৬০ লাখ ডলার Sep 15, 2025
img
লালন শাহকে সারা বিশ্বে পরিচিত করেছেন ফরিদা পারভীন : ফরহাদ মজহার Sep 15, 2025
img
ইন্টারনেট সেনসেশনের ভাইরাল আহমদ শাহ’র ছোট ভাই আর নেই Sep 15, 2025
পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাবে না ইসলামী আন্দোলন? Sep 15, 2025
মণিপুরে মোদির সফর ঘিরে বিক্ষোভ Sep 15, 2025
শিল্প বাণিজ্যের সম্ভাবনা নিয়ে জামায়াত আমিরের সঙ্গে শিল্প মালিকদের সাক্ষাৎ Sep 15, 2025
এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল তুরস্ক Sep 15, 2025
img
সুবর্ণ জয়ন্তীতে ফিরছে পিংক ফ্লয়েডের অমর অ্যালবাম 'উইশ ইউ ওয়্যার হিয়ার' Sep 15, 2025
img
বিভাজনের যেকোনো সুযোগে আ. লীগ ফিরবে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে : রাশেদ খান Sep 15, 2025
img
সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করলো ওয়াক্ফ আইন সংশোধনের বিতর্কিত ধারা Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গার পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত, এখনো বন্ধ দুই মহাসড়ক Sep 15, 2025
img
ঢাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ. লীগের ৪ নেতা গ্রেপ্তার Sep 15, 2025
img
ঝটিকা মিছিলের চেষ্টাকালে আওয়ামী লীগ নেতাদের গণপিটুনি Sep 15, 2025
img

এমি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫

আবারও এমি জিতলেন সুরকার থিওডর শ্যাপিরো Sep 15, 2025
img
যমুনা অভিমুখে প্রাথমিক শিক্ষকরা, পুলিশের জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ Sep 15, 2025
img
মাসসেরা টেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত মোহাম্মদ সিরাজ! Sep 15, 2025
img
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জামায়াতে ইসলামী বদ্ধপরিকর: গোলাম পরওয়ার Sep 15, 2025
img
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬৩৬ Sep 15, 2025