করোনা পৃথিবী ধ্বংসের প্রাথমিক ধাক্কা

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিশ্বের প্রায় ১৮৫টি দেশের কয়েক কোটি তরুণ-তরুণী রাজপথ দখল করে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে। তাদের দাবি ছিল, ‘পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাও। পৃথিবী থেকে মানুষের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হতে দেব না। জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। অতি রহস্যময় ভাইরাসের চূড়ান্ত গতিপ্রকৃতি নিরূপণে হিমশিম খাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এখনও কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। ফলে, প্রশ্ন উঠেছে, আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী কি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবে, নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে? পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে কি না, গুরুতর বিষয়টি সামনে এসেছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে ‘বিশ্ব কখনও তার আগের ছন্দে থাকবে না’- করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন, সভ্যতা কীভাবে ভেঙে পড়বে তার চিত্র।

ধ্বংসতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস পৃথিবী ধ্বংসের ঘণ্টা বাজিয়েছে। এ সংকট ‘কলাপসোলজি’ নামে নতুন এক আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে। যার মাধ্যমে আমাদের সমাজের সম্ভাব্য পতনের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এ তত্ত্বটি ফ্রান্সের মনুমেন্টাম ইন্সটিটিউট থেকে উদ্ভাবিত।

এ তত্ত্বের সমর্থক ফরাসি পরিবেশমন্ত্রী ইভেস কোচেট বিশ্বাস করেন, করোনাভাইরাস সংকট বিশ্ব বিপর্যয়ের আরেকটি নিদর্শন। কোচেট তার ‘বিফোর দ্য কলাপস’ বইয়ে পরবর্তী দশকে বরফ গলে যাওয়া নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ভাইরাস ধারণার চেয়েও অধিক হারে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণ হবে।

প্যারিস অষ্টম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসতত্ত্বের অধ্যাপক ইভেস কিটন বলেন, এখন যা কিছু ঘটছে তা পুরো বিশ্বের ভঙ্গুরতার প্রাথমিক লক্ষণ। এর মানে পৃথিবীর সমাপ্তি নয়, কিন্তু ভয়ংকর হুশিয়ারি। এটি সভ্যতার শেষের শুরু মাত্র।

হাউ এভরিথিং ক্যান কলাপসের সহকারী লেখক ও পরিবেশবিদ পাবলো সারভিগনে বলেন, মহামারী এই করোনাভাইরাসের আরও অন্যান্য খারাপ পরিস্থিতি যেমন: যুদ্ধ, সংঘাত ও দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত করবে। আর দুর্ভিক্ষ আমাদের আরেকটি ভাইরাস মোকাবেলায় দুর্বল করে ফেলবে। অর্থাৎ এই করোনা হলো- পৃথিবী ধ্বংসের প্রাথমিক ধাক্কা।

কার্বনমুক্ত অর্থনীতির লক্ষ্যে শিফট প্রজেক্ট থিংকট্যাংকের প্রধান জ্যাঁ মার্ক জানকোভিসি বলেন, এ ভাইরাস মোকাবেলায় ক্ষুদ্র পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং পেছনে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: