আঘাতের আগেই বাড়ি-ঘরে পানি উঠছে, উপকূলজুড়ে আতংক

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাতের আগেই পাল্টে গেছে উপকূলের চিত্র। ভেঙে যাচ্ছে বেড়িবাঁধ। প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যাচ্ছে। বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। ইতিমধ্যে আশ্রায়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে শুরু করেছে উপকূলের মানুষ। সেখানেও শান্তি নেই। পানি খাবার সংকটে রয়েছে তারা। এ অবস্থায় অনেকেই আবার আশ্রায়ন কেন্দ্র ছেড়ে যেতে শুরু করেছেন।

খুলনার পাইকগাছার সোলাদানায় আম্ফানের প্রবল স্রোতে ওয়াপদায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার সকাল ১০টায় শিবসা নদীর প্রচন্ড ঢেউয়ে উপজেলার বয়ারঝাপার ভাঙ্গাহাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় বিশাল এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। ফলে এলাকায় মারাত্মক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক ভাবে ৫০/ ৬০ জন মিলে সাময়িকভাবে বাঁধ রক্ষা করলেও আম্ফানে প্রভাবে কখন কি ঘটে যায় তা নিয়ে চরম আতংক বিরাজ করছে সর্বত্রই।

ভোলার মনপুরা উপকূলের কলাতলীর চর ও চরনিজামে সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। চরনিজাম ও কলাতলীর চরে আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বেড়ীরবাহিরে ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে থাকা মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে পারছেনা প্রশাসন। তবে দুপুরের দিকে বেড়ীর বাহিরে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় ধীরে ধীরে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে আসা শুরু করেছে।

এদিকে বরগুনায় দমকা হাওয়া, বারী বর্ষণ চলছে। জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। সাইক্লোন ঘূর্নিঝড় আমফান এর প্রভাবে বাতাসের গতি ও জোয়ারে পানি উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ভারী বর্ষণে ৪ - ৫ফুট বেড়ে যাওয়ায় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকে জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বড়ইতলা ফেরী ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পোটকাখালী, নিশানবাড়িয়া, ফুলতলা, বদনিখালী, গুলবুনিয়া, লতাকাটা, মাঝের চর, আয়লাসহ বিভিন্ন আবাসনপ্রকল্পে পানি প্রবেশ করায় জেলা প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ বেসরকারি সংগঠন জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পটুয়াখালীতে ঘূূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পাঁচটি গ্রামের লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এতে প্রায় এক হাজার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ভেসে গেছে পুকুর এবং ঘেরের মাছ। জোয়ারের তোড়ে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা ও চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা বেড়িবাঁধের কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানি ঢুকে পড়েছে । এছাড়া অনেক আগ থেকেই ভেঙে থাকা বাঁধ দিয়ে চালিতাবুনিয়ার গরুভাঙা, বিবির হাওলা ও মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামে পানি ঢুকেছে। ওই পাঁচ গ্রামের প্রায় এক হাজার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ে। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুর এবং ঘেরের মাছ। এছাড়া গলাচিপায় বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।

টাইমস/জেকে

Share this news on: