মস্তিষ্কের টিউমারের লক্ষণ ও চিকিৎসা

মস্তিষ্কের টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্রেইন বা মস্তিষ্কের টিউমার বলে। যেকোনো বয়সেই মস্তিষ্কের টিউমার হতে পারে। যার সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে রেডিয়েশন বা বিকিরণ একটা কারণ হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারনা। অতীতে পরিবারে কারও মস্তিষ্কে টিউমার হয়ে থাকলে অন্যদেরও খানিকটা ঝুঁকি থাকে।

এই টিউমার মোটামুটিভাবে দু’রকমের। একটি হলো- ম্যালিগ্যান্ট বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার। অন্যটি টিউমার, কিন্তু ক্যান্সার নয়। টিউমার কোষের ভিত্তিতে এই দুই ধরনের টিউমারকে আরও নানা ভাগে ভাগ করা হয়। একেক বয়সে মানুষের একেক ধরনের টিউমার হতে দেখা যায়।

লক্ষণ: বেশ কিছু লক্ষণ থেকে মস্তিষ্কের টিউমার সন্দেহ করা হয়। যার মধ্যে প্রচণ্ড মাথাব্যথা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে থাকতে পারে খিঁচুনি, বমি বা বমিভাব, আচরণগত পরিবর্তন, শরীরের এক পাশ দুর্বল হয়ে পড়া কিংবা এক পাশ ঝিমঝিম করা বা অবশ অনুভব করা, শরীরের ভারসাম্য হারানো বা হাঁটতে অসুবিধা হওয়া, দেখা, শোনা বা কথা বলার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হওয়া, স্মরণশক্তিতে ঘাটতি দেখা দেয়া কিংবা মনোযোগ দিতে না পারা।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা: এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। মস্তিষ্কের টিউমার ছাড়াও নানা কারণে এসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রোগীর মধ্যে থাকা লক্ষণগুলোকে বিশ্লেষণ করে এবং আনুষঙ্গিক শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে চিকিৎসক সে অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা (ইনভেস্টিগেশন) করতে দেবেন।

চিকিৎসা: টিউমার ধরা পড়লে সেটির আকার, প্রকার ও অবস্থানের (মস্তিষ্কের মধ্যে ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে) ওপর নির্ভর করে চিকিৎসাপদ্ধতি নিরূপণ করা হয়। রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হতে পারে চিকিৎসা। নানা ধরনের চিকিৎসার সমন্বয়ও করতে হতে পারে। লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসারও প্রয়োজন পড়তে পারে।

ঢাকাসহ বিভাগীয় মেডিকেল কলেজগুলোতে মস্তিষ্কের টিউমারের চিকিৎসা বা অপারেশন সফলভাবেই হচ্ছে নিয়মিত। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল ছাড়াও অনেক বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে।

মনে রাখবেন, সব ব্রেইন টিউমার কিন্তু দুরারোগ্য নয়। বিনাইন টিউমার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলো অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অনেক দিন পর্যন্ত সুস্থ বা কর্মক্ষম করা যায়।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: