খেলাপি ঋণ বেড়ে ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা

ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ আবারও বেড়েছে। গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে জানা গেছে, গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। আর এ বছরের মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো এখন নিজেই নিজেদের ঋণ পুনঃতফসিল করছে। ফলে ব্যাংক চাইলেই খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণের এ তথ্য প্রকৃত চিত্র নয়। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরও বেশি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক ব্যাংক ঋণ আদায় করতে না পেরে তারল্য-সংকটে ভুগছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। খেলাপি ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৫৭ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৬৫ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা, বা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়েছে।

অপরদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর বর্তমানে ঋণ খেলাপির ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত তিনটি ব্যাংকের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বর্তমানে খেলাপি।

খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, দেশের ব্যাংক খাতের অন্যতম বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। গত ১০ বছরে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ। খেলাপি ঋণ না কমে বরং দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ- ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া।

এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে থাকা লোকজনের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণেও ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ সমস্যা সমাধানে ব্যাংকের শীর্ষ নেতৃত্ব (এমডি) ও ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন, তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ কমানো এবং করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে, ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেঘনায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় দুই যুবক নিখোঁজ Nov 14, 2025
img
এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় বাড়ল Nov 14, 2025
img
ট্রাম্পের কাছে তথ্যচিত্রের জন্য ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি Nov 14, 2025
img
কুড়িগ্রামের নতুন ডিসি অন্নপূর্ণা দেবনাথ Nov 14, 2025
img
পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে, তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে Nov 14, 2025
img
গাজায় ধ্বংস প্রায় ৩ লাখ বাড়ি, শীতে তাঁবুতেই আশ্রয় নিচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা Nov 14, 2025
img
রাজধানীতে হালকা শীতের আমেজ, সকাল শুরু ১৯ ডিগ্রি তাপমাত্রায় Nov 14, 2025
img
ডিএসইর বাজার মূলধন কমল আরও ১৭ হাজার কোটি টাকা Nov 14, 2025
img
বরিশালে নতুন বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি নিয়োগ Nov 14, 2025
img
সাতক্ষীরায় ২ চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ৩ Nov 14, 2025
img
প্রয়োজন ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে ৯ কোটি টাকার সেতু Nov 14, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজ দেশে কত দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ Nov 14, 2025
img
রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা ছাড়া ভালো নির্বাচন সম্ভব নয় : আনোয়ারুল Nov 14, 2025
img
চীনে উদ্বোধনের পরই ভেঙে পড়ল সেতু Nov 14, 2025
img
তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে শান্তি ও সমৃদ্ধির: আবু সুফিয়ান Nov 14, 2025
img
শুকনা খাবারে লবণ বেশি হলে কী করবেন Nov 14, 2025
img
রাঙ্গুনিয়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে শ্রমিকদল নেতার মৃত্যু Nov 14, 2025
img
দিল্লি সফরে যাচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান Nov 14, 2025
img
সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১,৯২৩ জন Nov 14, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Nov 14, 2025