২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীনতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়।

আজ সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্বউদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরও অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরও লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনীতিতে আসে চরম ধাক্কা। যার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমরা এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেছি। আমাদের সরকারি কর্মকর্তা এবং দলীয় নেতাদের বলেছি, ইফতার পার্টি না করে নিম্নআয়ের মানুষকে সহযোগিতা করতে। ইফতার পার্টি করে খাওয়া বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াই বড় কথা। আমরা সেটাই করছি।

সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেনো এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিনিতে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি করায় অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাবার কাছ থেকে তার স্বপ্ন জনতাম বলে সে আলোকে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। আমরা বাংলাদেশের সে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, বাংলাদেশে ভাগ্য পরিবর্তনে। এখানে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। সবাই খাদ্য, চিকিৎসা পাবে, সেই ব্যবস্থা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা দেশে এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছে, আমরা বিজয়ের কথা বলতে পারিনি। মু্ক্তিযোদ্ধা নিজের পরিচয় দিতে পারেনি। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। একদিকে খুনি, আরেকদিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজত্ব ছিল। জাতির পিতা চেয়েছিলেন, একটি স্বাধীন জাতি। যে জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ভুখণ্ড পাবে। তিনি এজন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি অল্প সময় পেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনি একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় এতে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিতে পুরস্কার পাওয়া মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান প্রতিক্রিয়া জানান।

এবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তিনজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একজন, চিকিৎসাবিদ্যায় একজন, সংস্কৃতিতে একজন, ক্রীড়ায় একজন ও সমাজসেবায় তিনজনকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ এ পদক দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন খুররম (মরণোত্তর)।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ, সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এবং ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজসেবা অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এস এম আব্রাহাম লিংকন পুরস্কার পেয়েছেন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মুক্তির প্রথম ৬ দিনেই ৪০০ কোটির ক্লাবে ‘কান্তারা ১’ Oct 09, 2025
img
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা সাইফের অজানা গল্প Oct 09, 2025
img
‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে এবার ফেসবুকে পোস্ট উপদেষ্টা আসিফের Oct 09, 2025
img
চ্যাটজিপিটির সাহায্যে শনাক্ত অগ্নিকাণ্ডের সন্দেহভাজন Oct 09, 2025
img
'আল-আকসার মালিক আমরা' Oct 09, 2025
img
অস্থিতিশীল ফ্রান্সে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন ম্যাক্রোঁ Oct 09, 2025
img
‘দেশের হয়ে টেস্ট খেলতে ইচ্ছুক অভিষেক’, জানালেন লারা Oct 09, 2025
img
শেখ হাসিনার সাথে ৫ জন উপদেষ্টা হাত মিলিয়েছে : রাশেদ খান Oct 09, 2025
img
জানা গেল শহিদুল আলমসহ আটক অধিকারকর্মীদের অবস্থান Oct 09, 2025
img

অভিনেত্রী সৌমি পাল

‘বাড়িতেও ঢুকতে দেয়নি, আমার কি চরিত্র খারাপ ছিল?’ Oct 09, 2025
img
ট্রাম্প প্রস্তাবিত ‘শান্তি পরিকল্পনা’র ১ম ধাপ কার্যকরে একমত দুই দেশ Oct 09, 2025
img
প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছে ২ দেশ, জানালেন ট্রাম্প Oct 09, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন বাপ্পী চৌধুরী ও মাহিয়া মাহি Oct 09, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ Oct 09, 2025
img
হাতিরঝিলে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে বাসযাত্রী, আটক ৫ Oct 09, 2025
img
২ অজি ক্রিকেটারকে জাতীয় দল ছাড়ার প্রস্তাব আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির Oct 09, 2025
img
নানা আয়োজনে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডাক দিবস Oct 09, 2025
img
আল্লাহ নিশ্চয়ই মৃত্যুর পর মুগ্ধর সাথে আমার দেখা করাবেন: স্নিগ্ধ Oct 09, 2025
img
ইনজুরিতে ফুটবল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন মিলিটাও Oct 09, 2025
img
ফেনীতে ভারতীয় মাদকদ্রব্য সহ কারবারি গ্রেপ্তার Oct 09, 2025