১০ ফুট পানির নিচে সুন্দরবন, প্রাণীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় বনবিভাগ

বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন সময়ে জন্ম নেওয়া ঘূর্ণিঝড়ে স্থলভাগের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঠেকাতে বরাবরই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবন। রেমালের ব্যাপক তাণ্ডবে এবারও বুক চিতিয়ে লড়েছে সুন্দরবন। ঝড়ের সামনে লড়াই করে বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এই বন।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের এগিয়ে আসার আগমুহূর্তে আবারও আলোচনায় বাংলাদেশ অংশে ছয় হাজারের বেশি বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান, ইয়াসের মতো এবারও সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় রেমালকে মোকাবিলা করেছে।

যদিও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে বন্যপ্রাণীর বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে বন বিভাগ।

রোববার (২৬ মে) দুপুরের পর থেকেই সুন্দরবনে পানির চাপ বাড়তে থাকে। বিকেল নাগাদ সুন্দরবেনের বিভিন্ন এলাকা ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে যায়। বিশেষ করে কটকা, কচিখালি, নীলকমল, মান্দারবারি, হলদিবুনিয়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব এলাকা হরিণ, বানর, শুকরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এসব প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন বিভাগ।

এছাড়া সুন্দরবনের ভেতরে সবগুলো মিঠা পানির উৎস পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণী, বনজীবী ও বনকর্মীদের খাবার পানি নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

সুন্দরবন বন বিভাগের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি সেখানে আমরা দেখতে পেয়েছি, সুন্দরবনের যে মিঠা পানির পুকুরগুলো রয়েছে যা বন্যপ্রাণী, বনজীবী এবং বনকর্মীদের খাবার পানির একমাত্র উৎস; প্রতিটি পুকুরই লোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া পানির উচ্চতা সেখানে ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত হয়েছে। বনে বাঘ শাবক, হরিণ শাবক কিংবা শকুন শাবক এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী আছে। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যপ্রাণীরা এখানে হয়তো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে গাছপালার খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, কটকা, কচিখালি, নীলকমল, মান্দারবারি, হলদিবুনিয়া- যে সমস্ত বন্যপ্রাণীর অভায়ারণ্য এলাকা সেগুলো এবং সুন্দরবনের একদম দক্ষিণে সব জায়গা ৭ থেকে ১০ ফুটের মতো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। কাজেই এসব স্থানে পানির যে উচ্চতা, পানির যে তীব্র স্রোত হচ্ছে তাতে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, বন্যপ্রাণীদের যথেষ্ট ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গাজামুখী শেষ নৌযান ম্যারিনেটও আটক Oct 03, 2025
img
‘ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পাশে থাকবো’ Oct 03, 2025
img
আওয়ামী লীগ না থাকায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে জামায়াত : জাহেদ উর রহমান Oct 03, 2025
img
এখনও এগিয়ে যাচ্ছে ৯ জাহাজ, কৌশল প্রকাশ করলেন শহিদুল আলম Oct 03, 2025
img
ঢাকাকে সলিডারিটি হাব বানাতে হবে: ফরহাদ Oct 03, 2025
img
সমঝোতা হলে ১০০ আসন ছাড়বে জামায়াত : পরওয়ার Oct 03, 2025
img
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোনো বাধা নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল Oct 03, 2025
img
আমাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ, হারার পরে বললেন রশিদ খান Oct 03, 2025
img
নব্বই দশকের ‘ক্রাশ’ দিব্যা ভারতীর অকাল বিদায় আজও রহস্যময় Oct 03, 2025
img
পুলিশের সঙ্গে হামলার স্থানে যাচ্ছেন হিরো আলম Oct 03, 2025
img
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার রাজনীতি করে না : আমির আব্দুস সবুর Oct 03, 2025
img
বাংলাদেশসহ ১৭ দল নিশ্চিত করল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট Oct 03, 2025
img
আলজেরিয়া জাতীয় দলে জায়গা পেলেন জিদান পুত্র Oct 03, 2025
img
ড. ইউনূসের কথা আর কাজের মধ্যে অনেক পার্থক্য : জিল্লুর রহমান Oct 03, 2025
img
ভাষা সৈনিক আহমদ রফিকের মৃত্যুতে ঢাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Oct 03, 2025
img
জামায়াত-শিবিরের অন্য দলে কর্মী যুক্ত করার নীতি বন্ধ করতে হবে : রাশেদ খান Oct 03, 2025
img
বিদেশে পালানোর সময় বিমানবন্দর থেকে যুবলীগ নেতা আটক Oct 03, 2025
img
থ্রি ইডিয়টসখ্যাত রাঞ্চোকে কেন আটক করলো ভারত সরকার? Oct 03, 2025
img
মহাসড়ক থেকে বাস খাদে পড়ে নিহত ১, আহত ৩০ Oct 03, 2025
img
দীর্ঘ ৯ বছর পর দেশের মাটিতে রাহুলের সেঞ্চুরি Oct 03, 2025