ব্রণ আমাদের শরীরের জটিলতার ইঙ্গিত দেয় এটা অনেকেই জানেন না। শরীরের অনেক জটিল রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে ব্রণ। ব্রণের অবস্থান থেকে শরীরের কোথায় সমস্যা হয়েছে সেই সংকেত পাওয়া যায়। মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের প্রতিবেদনে ব্রণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরে ব্রণের অবস্থান বিভিন্ন রোগের নির্দেশনা দেয়। আর যখন ব্রণের কারণ জানা থাকে তখন প্রতিকার পাওয়াও সহজ হয়ে যায়।
মুখ ও মাথার ত্বক: মুখের ত্বক আর মাথার ত্বকের মাঝখানে যে অংশ, তার কাছাকাছি জায়গায় যদি প্রায়ই ব্রণ হয়, তাহলে চুলের যত্নে ব্যবহৃত প্রসাধনী এর জন্য দায়ী হতে পারে। চুলে ব্যবহৃত প্রসাধনী এই জায়গার ত্বকে জমে ত্বকের স্বাভাবিক ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে। পেট্রোলিয়াম জেলি বা মিনারেল অয়েলসমৃদ্ধ, বেশ পুরু বা ভারী ঘনত্বের প্রসাধনী ব্যবহারে এমন হয়। এ ক্ষেত্রে ব্রণ এড়াতে যা করতে পারেন-
পেট্রোলিয়াম জেলিজাতীয় প্রসাধনী এড়িয়ে চলুন। কোকোয়া বাটারসমৃদ্ধ কিংবা চুলের রং হিসেবে ব্যবহৃত পণ্যের কারণে ব্রণ হতে পারে। এসব এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। এ ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করলে ভালোভাবে মুখের ত্বক পরিষ্কার করুন।
চুলে স্প্রে বা ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহারের সময় মুখের ত্বক ঢেকে রাখুন হাত বা তোয়ালে দিয়ে।
সপ্তাহে এক-দু’বার সাধারণ শ্যাম্পুর পরিবর্তে ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
কপালে ও নাকে: ত্বকের তৈলাক্ততার কারণে মুখের ‘টি জোন’, অর্থাৎ কপাল আর নাকে ব্রণ হয়। তাই ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ বা পরিষ্কারক ছাড়াও অন্যান্য প্রসাধনী বেছে নেয়া জরুরি। আবার মানসিক চাপের কারণেও এই অংশে ব্রণ হতে পারে। মানসিক চাপ সামলে চলতে চেষ্টা করুন। সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া, রোজ অল্প সময়ের জন্য হলেও শরীরচর্চা করা, পছন্দের অডিও ক্লিপ শোনা, বই পড়া কিংবা ধ্যান করার মতো অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন মানসিক চাপ মোকাবিলায়। এ ছাড়া খেয়াল করুন, ত্বকের এই অংশ বারবার স্পর্শ করার অভ্যাস আছে কিনা। নিজের অপরিষ্কার হাতের কারণেও এসব জায়গায় সহজে ব্রণ হতে পারে। এই বদভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি।
এক পাশের গালে: এক পাশের গালে বারবার ব্রণ হওয়ার কারণ হতে পারে মোবাইলফোন, বালিশের কভার কিংবা আপনার নিজের হাতে লেগে থাকা ময়লা। তাই প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বালিশের কভার বদলানো জরুরি। এ ছাড়া প্রতিবার মোবাইলফোন ব্যবহারের আগে তা মুছে নেয়া উচিত। আর কোনো অবস্থাতেই ফোন নিয়ে বাথরুমে যাবেন না।
চিবুক বা থুতনির কাছে: হরমোনের সমস্যার কারণে এই অংশে বারবার ব্রণ হতে পারে। মাসিক শুরু হওয়ার আগে প্রাকৃতিক নিয়মে হরমোনের পরিবর্তন কিংবা হরমোননির্ভর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কারণে এখানে ব্রণ হতে পারে। এ জায়গায় ব্রণ হওয়ার ক্ষেত্রে খাবারদাবারেরও ভূমিকা থাকতে পারে। তাই রিফাইনড বা পরিশোধিত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিন। যেসব দুগ্ধজাতীয় পণ্যে হরমোন যোগ করা থাকে, সেসব এড়িয়ে চলুন।
মনে রাখতে হবে, ব্রণের অবস্থান দেখেই এর প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। এর সঙ্গে আরও বিষয় জড়িত থাকতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনধারার নানা দিক মেনে চলার পরও বারবার ব্রণ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ব্রণ একাই চলে যাবে এমনটা ভেবে অপেক্ষা করার দরকার নেই।