রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি বাসায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সীমা আক্তার (২২) ও তার গর্ভে থাকা নবজাতকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান সীমা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সোয়া ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী শহিদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে নিহতের বাবার বাসায় ছুরিকাঘাতের এই ঘটনা ঘটে। সীমার ভাই মো. নাসির জানান, সীমা তার স্বামী জুয়য়েলকে নিয়ে শহিদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে আমাদের বাসার কাছাকাছি ভাড়া থাকতো। তার চার বছরের আরও একটি ছেলে ছিল। সীমার স্বামী জুয়েল যাত্রাবাড়ী মোড়ে ফলের ব্যবসা করেন। তারা মাঝেইমধ্যেই আমাদের বাসায় আসত। গতকালও আমাদের বাসায় আসে।
তিনি আরও জানান, গত রাতে এক যুবক ছুরি হাতে বাসার ভেতরে ঢুকে। সে সময় সীমা ও তার চার বছর বয়সী সন্তান বাসায় ছিল। ওই যুবক কিছু না বলেই ছুরি নিয়ে সীমার দিকে তেড়ে যায়। তখন সীমা বলে আমাকে মারবেন না, আমার পেটে সন্তান আছে। সীমার কথা কর্ণপাত না করেই পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তবে ওই যুবককে চিনতে পারেনি সীমা।
পরে রাতেই সীমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তাৎক্ষণিক সীমাকে সিজার করেন চিকিৎসকেরা। সীমার ছেলে সন্তান হয়, তবে তার বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। তখন চিকিৎসকেরা নবজাতকটিকে আইসিইউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে আইসিইউতে নেয়ার আগে রাতেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মারা যান সীমা।
সীমার স্বামী মো. জুয়েল জানান, আমাদের কোনো শত্রু নাই। কেন আমার স্ত্রী সন্তানকে মেরে ফেলল। আমার স্ত্রী বারবার বলছে তার পেটে বাচ্চা আছে মেরো না, তবুও আমার স্ত্রীকে ছাড়ে নাই। আমি এর বিচার চাই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে ছুরিকাঘাতে আহত এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করেন স্বজনেরা। রাতেই সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হয়। তবে শিশুটি মারা যায়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেলে মারা যায় নবজাতকের মা সীমা আক্তার।