বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি প্লাটফর্ম যা দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখে । সরকারি তিতুমীর কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা বর্তমানে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। শিক্ষার্থীরা মনে করে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তর করা হলে দেশ ও জাতি গঠনে সরকারি তিতুমীর কলেজের যে ভূমিকা, তা বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে । সেই সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা সরকারি তিতুমীর কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি জানাচ্ছে । একই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে তিতুমীর কলেজের মতো বৃহৎ কলেজ থাকায় নানা রকম প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে । এসকল জটিলতা দূরীকরণে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই ।
তাই, গত ২২শে সেপ্টেম্বর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং চলমান বিভিন্ন সংকট নিরসনে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে র্যালি ও শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করেছে । এই মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্র ও যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট ৪ দফা দাবি পেশ করেছেন
১। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিশন গঠন এবং আইন পাশ করে সরকারি তিতুমীর কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়) হিসেবে ঘোষণা করা হোক ।
২। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরবর্তী সময়ে অতিদ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সকল কার্যক্রম ( একাডেমিক ও প্রশাসনিক) তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তান্তর করতে হবে।
৩। দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থায়ন প্রদান অর্থাৎ একটি সম্পূরক বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে ।
৪। যোগ্যতা সম্পন্ন ভিসি, অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগের মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে।
তাদের পক্ষ থেকে আমিনুল ইসলাম( গণিত বিভাগ:২০-২১) বলেন:-
"সরকারি তিতুমীর কলেজে বর্তমানে শুধুমাত্র স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা প্রদান করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা অর্জন করলে এটি উন্নত গবেষণার সুযোগ দিতে পারবে এবং উচ্চতর গবেষণামূলক প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে। এতে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন হবে একই সাথে রাষ্ট্রে দক্ষ মানব-শক্তি তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হলে এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। স্থানীয় ব্যবসা ও শিল্পখাতের উন্নয়নেও এটি সহায়ক হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার জন্য যে সকল অবকাঠামো দরকার তার প্রায় সবই তিতুমীর কলেজে রয়েছে। তাই সম্পূর্ণ নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে যে ব্যয় হয়, তিতুমীর কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ করা হলে সরকারকে বা রাষ্ট্রকে সেই অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হবে না। তাই, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের জন্য সময়োপযোগী ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হবে বলে আমাদের ধারণা। তাই, রাষ্ট্রের যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট আমাদের দাবি সরকারি তিতুমীর কলেজকে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক । "
এরই প্রেক্ষিতে আজ ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। ঐ স্মারকলিপিতে সংযুক্তি হিসেবে তারা প্রায় ৩০০০ শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষরের কপি ও তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণে ১১ পৃষ্ঠার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের স্মারক নং সংবলিত স্মারকলিপিসহ গণস্বাক্ষরের কপি ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।